উখিয়ায় পুলিশ-জনতার সংঘর্ষে আহত ১০, ইউএনও’র গাড়ি ভাঙচুর

কক্সবাজার প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
কক্সবাজারের উখিয়ায় স্কুল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  এ ঘটনায় উখিয়ায় ‘ইউএনও’র গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে।  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে।  এসময় পুলিশ, শিক্ষকসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।  এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২ মে) বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে উখিয়ার উপজেলার সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে।  এসময় সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিলন কুমার বড়ুয়া, বাবুল আবছারসহ পুলিশের দুই সদস্য আহত হন।  অপরদিকে গ্রামবাসীর মধ্যে দেলোয়ার (১৫), ফয়সাল (২০), হাসিনা বেগম (৩০), কবির আহমদ (৫০), মরিয়ম বেগম (৩৫) ও আবদু ছবি (১৬) নামে ৬ জনসহ আরও কয়েকজন আহত হন।  এই ঘটনার পর সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
উখিয়ার সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামশুল আলম ভুলু জানিয়েছেন, ‘বিদ্যালয়ের পাশে একটি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য উখিয়া উপজেলা সহকারী (ভূমি) কমিশনারকে সঙ্গে নিয়ে উখিয়া নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন।  এসময় এর বিরোধিতা করেন স্থানীয় আবু সৈয়দ ওরফে ফজলী, মো. কালু, নুরুল আলম নুরুসহ আরও কিছু গ্রামবাসী।  এসময় তাদের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রথমে বাকবিতণ্ডা হয়।  এতে বিরোধিতাকারীরা তেড়ে এলে উভয়পক্ষের সংঘর্ষ হয়।  এসময় ইউএনও’র গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা।  পরে ঘটনাস্থলে উখিয়া থানার পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।  এক পর্যায়ে গ্রামবাসীর ওপর গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তারা।
উখিয়ার থানার ওসি মঞ্জুর মোরশেদ জানিয়েছেন, ‘স্কুল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তরকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছে- এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।  এসময় পুলিশের উপস্থিতি দেখে আকস্মিক পুলিশকে লক্ষ করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে তারা।  বাধ্য হয়ে পুলিশ ফায়ার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  এসময় ঘটনার নেতৃত্বদানকারী ওই এলাকার আবু সৈয়দ ওরফে ফজলী (৪০) ও মো. কালু (৫৫) কে গ্রেফতার করে।  এ ব্যাপারে উখিয়া থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে’।
জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, ‘উখিয়ার সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের জন্য যে জমিটি নির্বাচন করা হয়েছে সেটিতে থাকা বিরোধ কিছুদিন আগে সমাধান হয়ে গেছে।  কিন্তু, কিছু উচ্ছৃখল যুবক হঠাৎ আমাদের ওপর হামলা করে।  এসময় তাদের ইট পাটকেলের আঘাতে গাড়ির কাচ ভেঙে যায়।  পরে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে।  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ডিসি/এসআইকে/আরএস