কিশোরীর গলাকাটা লাশের পাশে মিলল রশি বালতি জুতা, চাচাতো ভাই আটক

ফেনী প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
ফেনীর কালিদহে তানিশা ইসলাম (১১) নামে এক কিশোরীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  বৃহস্পতিবার (৬ মে) রাতে সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের কালিদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  নিহত তানিশা সৌদিআরব প্রবাসী শহিদুল ইসলামের ছোট মেয়ে ও ফেনী শহরের ডাক্তারপাড়াস্থ মহিউচ্ছুন্নাহ মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জিঙ্গাসাবাদের জন্য রাতেই কিশোরীর চাচাতো ভাই আক্তার হোসেন নিশানকে (১৬) আটক করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী।  আটক আক্তার হোসেন নিশান ওই বাড়ির মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে।  সে লস্করহাট মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণির ছাত্র।
নিহতের মা তাসলিমা আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বড় মেয়ে তাসনুভা ইসলামকে নিয়ে পাশের বাড়ি বেড়াতে যায়।  ওই সময়ে ঘরে ছোট মেয়ে তানিশা ইসলাম ও তার বৃদ্ধ শাশুড়ি ওয়াজ খাতুন ছিলো।
রাত ১০ টার দিকে পাশের বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি ফিরে ছোট মেয়ে তানিশাকে না দেখে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।  এক পর্যায়ে সিড়ি বেয়ে বাড়ির ছাদে উঠলে ছাদের চিলেকোঠা ঘরে তানিশার রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে।  এসময় তাদের চিৎকারে আশপাশের বাড়ির স্বজরা এগিয়ে এসে পুলিশকে খবর দেয়।
ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর হায়দার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবীসহ জেলার পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।  পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।  পুলিশ জিঙ্গাসাবাদের জন্য নিহতের চাচাতো ভাই আক্তার হোসেন নিশানকে আটক করেছে।  এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।
নিহতের বড় বোন তাসনুভা ইসলাম জানান, বুধবার ছোট বোন তানিশার জন্মদিন থাকায় বুধবার বিকেলে তিনি স্বামীর বাড়ি থেকে বোনের জন্য গিফট নিয়ে বাড়িতে আসেন।  বুধবার রাতে পরিবারের সবাই ধুমধাম করে বোনের জন্মদিন পালন করেছে।  ঘটনার সময় তাদের একমাত্র ভাই আশরাফুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী মসজিদে ইতেকাফে ছিলো।  তাদের পরিবারের সঙ্গে কোনো পরিবারে কোনো ধরনের বিরোধ ছিলো না।  কেন বোনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারেছেন না।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশে পরিদর্শক (ওসি) এ এন এম নুরুজ্জামান জানান, খুনি তানিশাকে ছাদের ওই কক্ষে নিয়ে রশিতে ফাঁস দিতে চেষ্টা করে ছিলো।  এর আগে তাকে বালতির পানিতে ডুবিয়েও হত্যা করতে চেষ্টা করেছিলো।  প্রাথমিকভাবে সেরকম আলামত পাওয়া যায়।  পরে তাকে গলাকেটে হত্যা করে ছাদ লাগোয়া গাছ বেয়ে নিচে নেমে যায় খুনি।  পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রশি, বালতি, খুনির জুতোসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।
পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী জানান, ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ।  থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডির একাধিক তদন্ত দল কাজ শুরু করেছে।  কি কারণে কিশোরীকে হত্যা করা হয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে।  হত্যার আগে কিশোরীকে ধর্ষণ বা অন্য কোনো কিছু করা হয়েছে কিনা তা ময়নাতদন্তে জানা যাবে বলেও পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।

ডিসি/এসআইকে/এফআরএ