চাঁদা দিয়েও রক্ষা পেলোনা পানছড়ির ফলের বাগান

আরিফুল ইসলাম মহিন, পানছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি >>>
পার্বত্যজেলা খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের শনটিলা ও নয়াপাড়ার সীমানায় আলীচান পাড়া ও কালানাল এলাকায় দুটি ফলদ বাগানের গাছ কেটে দিয়েছে পাহাড়ি দুর্বৃত্তরা।  শুক্রবার (২৮ মে) ভোরগত রাতে এই ঘটনা ঘটায় তারা।
শনটিলা ও নয়াপাড়ার সীমানা সংলগ্ন ৭.২০ একর জমির বাগানের মালিক ওবাদুল হক আবাদ বলেন, চার বছর ধরে পরিশ্রম করে ৪ শতাধিক আম গাছ, ৬ হাজার সেগুন গাছসহ বিভিন্ন ফলদ-বনজ গাছ লাগিয়েছি।  প্রতিবেশি আলো চাকমা ইতোপূর্বে আমাকে বাগানে না যাওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম হুমকি দিত।  বাগান পাহারাদারকে উপজাতীয় সন্ত্রাসীগ্রুপের লোকজন তাড়িয়ে দিয়েছে।  আবার বাগানে পাহারা না দেওয়ার জন্য জোরপূর্বক
স্ট্যাম্পে সই-স্বাক্ষর নিয়েছে।  পরে আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।  আমার বাগানের সাথে আলীচান কার্বারীর মেয়ের বাড়ি ও বাগান।  বাগানের ক্ষতি করবে না তার নিশ্চয়তা দিলে উপজাতী আঞ্চলিক সংগঠনের ধার্য্যকৃত চাঁদাও পরিশোধ করি।  তার কোনো কাছ না কেটে আমি বাঙালি- এই নেতিবাচক ধারণায় আমার বাগান ধ্বংস করে দিয়েছে।
এদিকে একই রাতে কালানাল এলাকার বাসিন্দা মো. ইয়াসিন মিয়ার ২ একর জমির ৩ শতাধিক আম গাছও কেটে দিয়েছে উপজাতীয় দুর্বৃত্তরা।  মো. ইয়াসিন মিয়ার পিতা তাজুল ইসলাম জানান, আলীচান পাড়ার দীর্ঘনাথ ত্রিপুরার ছেলে চন্দ্রনাথ ত্রিপুরা ও তার ভাই জ্যোতিনাথ ত্রিপুরার কাছ থেকে ২০১৮ সালে উক্ত জমি ক্রয় করে সেখানে আমার ছেলে ইয়াছিন আম বাগান করেছে।  গত তিনদিন আগে চন্দ্রনাথ ত্রিপুরা আরো টাকা দাবি করে।  তার অন্যায় দাবি না মেটানোয় আমাদের বাগানের গাছগুলো এভাবে কেটে দিয়েছে।
কেটে ফেলা বাগানেই কথা হয় আলীচান পাড়ার কার্বারী (গ্রাম্য সরদার) নিরু কার্বারী, বাবন চাকমা ও চন্দ্রনাথ ত্রিপুরার সাথে।  তারা জানায়, শুক্রবার সকালে আমরা বাগান কেটে ফেলার কথা শুনে দেখতে এসেছি।  কে বা কারা বাগান এভাবে কেটে ধ্বংস করলো তা আমাদের জানা নেই।
এভাবে বাগানের আম, সেগুন ও কলা বাগান ধ্বংস করায় বাঙালি বাগান মালিকদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।  তাদের আশঙ্কা- হয়তো অন্যান্য বাঙালিদের বাগানও রাতের আঁধারে কেটে দিতে পারে অপরাধীরা।
বাগানের বিপুলসংখ্যক গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেন জানান বাগান মালিক ওবায়দুল হক ও ইয়াসিন মিয়া।
এ বিষয়ে পানছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. দুলাল হোসেন জানান, আমি বিষয়টি জেনেছি।  বাগান মালিকেরা মামলা করলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিসি/এসআইকে/এআইএম