কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে চাঁদা বা অর্থ সহায়তা নেয়া যাবে না : ডিএমপি কমিশনার

ফাইল ছবি

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
‘মুজিববর্ষে পুলিশ নীতি, জনসেবা আর সম্প্রীতি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামি ৩০ অক্টোবর পালন করা হবে কমিউনিটি পুলিশিং ডে। রাজধানী ঢাকার আটটি ক্রাইম বিভাগে পৃথকভাবে আয়োজন করা হবে নানা অনুষ্ঠান। তবে কমিউনিটি পুলিশিং ডে’কে কেন্দ্র করে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদা বা অর্থ সহযোগিতা না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালন করা নিয়ে যাতে কোনো বিতর্ক তৈরি না হয় সে বিষয়েও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
২০১৬ সাল থেকে ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ মতবাদকে অনুসরণ করে ব্যাপকভাবে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম চালিয়ে আসছে বাংলাদেশ পুলিশ। তবে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় কমিউনিটি পুলিশের কমিটিতে মাদক ব্যবসায়ী ও বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং কমিউনিটি পুলিশের কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম অপকর্ম করারও অভিযোগও রয়েছে।
সম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের ব্যয় নির্বাহে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে চাঁদা গ্রহণ করা যাবে না। অনুষ্ঠানের খরচের হিসাব সংশ্লিষ্ট ডিসির (উপ-কমিশনার) তদারকিতে পরিচালিত হবে। ব্যয় নির্বাহে যাতে কোনও বিতর্কের সৃষ্টি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে অনুষ্ঠানের আড়ম্বর কমতে পারে তবে অংশগ্রহণকারীদের মান এবং স্বতস্ফুর্ততার যাতে ঘাটতি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে’।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, করোনার কারণে চলতি বছর সীমিত পরিসরে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালন করতে হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার প্রতিটি ক্রাইম বিভাগের সংশ্লিষ্ট উপ-কমিশনার কার্যালয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এসব সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন একজন করে কর্মকর্তা অংশ নেবেন। এছাড়া আলোচনা সভায় কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্য, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ছাত্র-শিক্ষক ও নারী প্রতিনিধিদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে বলা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনায় বলা হয়, কমিউনিটি পুলিশিং ডে’র আলোচনা সভায় পুলিশ এবং জনগণের সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ- ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, জঙ্গি, মাদক, এসিড নিক্ষেপ, শিশু অপহরণ, নারী ও শিশু পাচার, বাল্য বিবাহ, ইভ-টিজিং এবং সন্ত্রাস দমন ও প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া পরিবহন মালিক, চালক ও হেলপারদের নিয়ে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনা, শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের অসন্তোষ দূর করা, মাদক প্রবণতা রোধ, সহিংসতা প্রতিরোধ, স্থানীয় পর্যায়ে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা, কিশোর-তরুণ সন্তানদের বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা করা, কর্মজীবী নারী ও স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের গমনাগমনের পথে ইভ-টিজিং প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াসহ নানা বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বিভিন্ন অপকর্ম রোধে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালন করা হবে। এবার ছয়টি ক্রাইম বিভাগে পৃথকভাবে এবং রমনা ও মতিঝিল বিভাগ মিলে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের সঙ্গে কেন্দ্রীয়ভাবে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালন করবে।
এদিকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুধু ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা নয়, ৩০ অক্টোবর সারা দেশে পুলিশের সকল ইউনিটেই একযোগে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালন করা হবে। প্রতিটি ইউনিট পৃথক পৃথকভাবে আলোচনাসভাসহ নানা অনুষ্ঠান ও র‌্যালির আয়োজন করার কথা রয়েছে। এছাড়ার বিভিন্ন ইউনিটের শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার ও শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং মেম্বারদের পুরস্কৃতও করা হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ