বাকলিয়া একসেস রোডের দুঃখ সেই ভবনটি খাস জমিতে নির্মিত!

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না বাকলিয়া এক্সেস রোডের সেই বিতর্কিত ১০ তলা ভবন ঘিরে। এবার ভবন মালিকের বিরুদ্ধে সরকারি খাস জায়গা ও অন্যের জমি নিজের নামে দেখিয়ে ভবন নির্মাণের জন্য সিডিএর অনুমোদন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, রফিকুল আলম ও জাহাঙ্গীর আলম নামে দুই ভাই ২০১০ সালে জায়গা কিনে নেন বিতর্কিত দশতলা ভবনের মালিক মো. ইকবালের ভাই মো. সোহেলের কাছ থেকে। ওই সময় এই জমি বিক্রির প্রথম সাক্ষী ছিলেন মো. ইকবাল। কিন্তু সবকিছু জেনেও ২০১৩ সালে ৭ মার্চ এই এলাকার বিভিন্ন দাগের জায়গায় ৬টি ভবন নির্মাণের জন্য সিডিএ থেকে অনুমোদন নেন ইকবাল। এতেও করেছেন অনিয়ম। সরকারি খাস জায়গা ও অন্যের জায়গাকে নিজের দেখিয়ে অনুমোদন নেন তিনি।
ভুক্তভোগী জায়গার মালিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা দুই ভাই ২০১০ সালে ইকবালের ভাই থেকে জায়গা কিনেছি। এর তিন বছর পর তিনি আমার জায়গা নিজের নামে দেখিয়ে ভবন নির্মাণের অনুমোদন নেন। জেনে শুনে এমন কাজ অবশ্যই কোনও একটি উদ্দেশ্য নিয়ে করেছেন তিনি।
জাহাঙ্গীর বলেন, ওই এলাকায় বিভিন্ন দাগের জায়গায় ৬টি ভবন নির্মাণের অনুমোদন নিয়েছেন ইকবাল। এরই মধ্যে ৫টি ভবনের মধ্যে ২টি নির্মাণাধীন ও ৩টির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি একটি ভবন নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে আমার কেনা জমিতে।
বিএস খতিয়ান অনুযায়ী, বাকলিয়া এক্সেস রোডের প্রকল্প সংলগ্ন ২৩৮১৮, ২৩৮১৯, ২৩৮১৪, ২৩৮১৩ এর একাংশ, ১৭০৫১ দাগে জায়গার ওপর ৫টি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই এলাকায় বাকি ২৭০৪৯/২০৩১০ দাগের সরকারি খাস জায়গা ও ২৩৯০৮ দাগের আরও একটি খাস জায়গা (বর্তমানে নালা) এবং ২৩৮১৩ এর একাংশ খালি রয়েছে। বাকি একটি ভবন সরকারি খাস জায়গা ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় করার পরিকল্পনা বলে দাবি ভুক্তভোগীর।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ভবন মালিক মো. ইকবাল বলেন, কারও জায়গার ওপর ভবন নির্মাণের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। তাছাড়া এমন কিছু ঘটে থাকলে দেশে আইন আদালত আছে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তিনি যদি মনে করেন আমি তার জায়গা দখল করেছি, তাহলে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
মো. ইকবাল আরও বলেন, বিষয়টা নিষ্পত্তিযোগ্য। জাহাঙ্গীর আমার ভাইয়ের কাছ থেকে জায়গা কিনেছেন। কিন্তু জায়গাটি খাস হয়ে গেছে। তিনি খোঁজ রাখেননি। এখন আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস ও বাকলিয়া এক্সেস রোডের প্রকল্প পরিচালক কাজী কাদের নেওয়াজ টিপুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কিছুই জানেন বলে জানান। পরে সিডিএর প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ শাহীনুল ইসলামকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
তবে তৎকালীন সময়ে নকশায় অনুমোদন দেওয়া সহকারী নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি খাস জায়গা ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা নিজের দেখিয়ে অনুমোদন নেওয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয়নি।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ