সিএমপিতে ডোপ টেস্টে ধরা খেয়ে চাকুরি হারাচ্ছেন পুলিশে থাকা অপরাধীরা

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা ও সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) ছয় সদস্য চাকরি হারিয়েছেন। আরও ৫ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের চলমান ডোপ টেস্টে মাদক সেবনের অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় তাদের এসব শাস্তি দেয়া হচ্ছে। পুলিশের চাকুরির অন্তরালে মাদক বাণিজ্য, মাদক সংশ্লিষ্টতাসহ নানান অপরাধ যাদের ক্ষেত্রে প্রমাণিত হচ্ছে সেসব পুলিশে থাকা অপরাধীদের বিরুদ্ধেই নেয়া হচ্ছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
জানা গেছে, ডোপ টেস্টের বাইরে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাওয়ায় চাকরিচ্যুত করা হয়েছে আরও ২১ পুলিশ সদস্যকে। মোট ডোপ টেস্টে পজিটিভ ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় ২৭ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে সিএমপিসূত্রে ।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপরই তাদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনা হয়। মাদকসেবন ও কেনাবেচার ব্যাপারে বাংলাদেশ পুলিশ শূন্য সহিষ্ণুতা ঘোষণা করেছে। এরই অংশ হিসেবে পুলিশ হাসপাতালে নিয়মিত ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যদের শনাক্তের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আরও বেশ কিছু পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে এসবের ফল হাতে পৌঁছাবে। ডোপ টেস্টে মাদকাসক্তের প্রমাণ মিললে কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না বলে পুলিশের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর জানান, গত এক বছরে প্রায় ২০০ জন পুলিশ সদস্যকে ডোপ টেস্ট (মাদকাসক্তি পরীক্ষা) করানো হয়েছে। ১১ জনের পজেটিভ রিপোর্ট পেয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ৬ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বাকি ৫ জনের বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ডোপ টেস্টের বাইরে আরও ২১ জনকে বিভিন্ন অপরাধে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন অপরাধ আছে। এর মধ্যে কিছু আছে ব্যক্তিগত অপরাধ। যেমন যৌতুকের মামলা, যা আদালত বা আমাদের কাছে প্রমাণিত হয়েছে। কর্মস্থলে অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকা বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায়। মাদকের সঙ্গে বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
বিপদগামী সদস্যদের কাউন্সিলিং এবং মোটিভেশন দেয়ার প্রশ্নে পুলিশ কমিশনার বলেন, পুলিশের জবটা সব সময়েই চ্যালেঞ্জের। এখানে অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সুযোগ থাকে। অপরাধ থেকে পুলিশ সদস্যদের দূরে রাখার জন্য প্রথমে আমরা একটা কোয়ালিটি সম্পন্ন কর্মস্থল দেওয়ার চেষ্টা করি। আমরা বিভিন্ন সময়ে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মোটিভেশনাল কথাবার্তা বলে থাকি। শাস্তির বিধান যে কঠিন, আর ব্যক্তির দায় বাহিনী কখনো নেবে না সে বার্তাটি দিয়ে থাকি। আমরা পুলিশ সদস্যদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি অপরাধ করলে কোনো ছাড় নেই। আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা ও মনিটরিং অত্যন্ত নিবিড়। অপরাধ করে কেউ ছাড় পাবে না।

ডিসি/এসআইকে/আরসি