দেড় মাসে অর্ধশতাধিক ধর্ষণের অভিযোগ আশিকদের বিরুদ্ধে

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
কক্সবাজারে ধর্ষণকাণ্ডের মূলহোতা আশিকুল ইসলাম আশিকের নামে শুধু কক্সবাজার সদর থানায় অস্ত্র, ইয়াবা, ছিনতাইসহ অন্তত ১৬টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।  ধর্ষণকাণ্ডের পর আশিকদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন অনেক ভুক্তভোগী, বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
অভিযোগ উঠেছে, আশিক ও তার সঙ্গীরা গত দেড় মাসে কক্সবাজার শহরের কটেজ জোন লাইটহাউস সরণি এলাকায় যৌনপল্লী হিসেবে পরিচিত লাভ করা কয়েকটি কটেজে নিয়মিত হানা দিয়ে সেখানকার অর্ধশতাধিক তরুণীকে (যৌনকর্মী) ধর্ষণ করেছে।
শুধু তাই নয় সেখানে মনোরঞ্জনের জন্য আসা শতাধিক পর্যটক, কটেজ ও কর্মরত কর্মচারীদের উলঙ্গ ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায়ের অভিযোগও উঠেছে।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায়ই রাত সাড়ে ৯ থেকে ১২টা পর্যন্ত একাধিকবার এসব কটেজে হানা দেয় আশিকের লোকজন।  এ সময় কটেজে থাকা মেয়েদের মারধরের পর তাদের মোবাইল, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।  পাশাপাশি পছন্দমতো সুন্দরী মেয়েদের তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আশিক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দেড় মাসে অন্তত ৫০ বারের বেশি একইভাবে হানা দিয়েছে আশিক।  প্রত্যেকবারই ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো না কোনো তরুণীকে ধর্ষণ করেছে আশিক এবং তার সঙ্গীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐসব কটেজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তিরা জানান, শুধু কটেজের অর্ধশতাধিক মেয়েদের জোরপূর্বক ধর্ষণ ও তাদের টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়েছেন তা নয়; গত এক মাসে এসব কটেজে মনোরঞ্জনের জন্য আসা কয়েকজন পর্যটক ও কটেজের মালিক-কর্মচারীদের ধরে নিয়ে তাদের উলঙ্গ করে মেয়েদের সঙ্গে ছবি তুলে মুক্তিপণ আদায় করেছে আশিক।
সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্যমতে, গত কয়েক দিন আগে আমের ড্রিম কটেজের স্টাফ আমান উল্লাহ ও ঢাকার বাড়ি কটেজের স্টাফ নাহিদকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাদের মারধর ও উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ করে আশিক।  এরপর তাদের জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করে।
এসব কটেজের ব্যবসায়ীরা জানান, নিজেরা অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকায় আশিকের বিরুদ্ধে মামলা করতে ভয় পেয়েছেন তারা।  তবে মাসিক মাসোহারা আদায় করা পরিচিত পুলিশ অফিসারদের আশিকের বিষয়ে অভিযোগ দিলে তারা ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন।
কক্সবাজার শহরের এসব অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধের পাশাপাশি ধর্ষণে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, কটেজ ব্যবসায়ী বা পর্যটকদের কেউ অবগত করেননি।  এরপরও অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।  একই সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপ চলা কটেজগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

ডিসি/এসআইকে/এফআরইউ