অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করতো আশিক : র‍্যাব

কক্সবাজার প্রতিনিধি ও নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
কক্সবাজারে স্কুলছাত্রী ধর্ষণে অভিযুক্ত আশিককে বখাটে বলে দাবি করে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাইরুল ইসলাম সরকার বলেছেন, সে প্রায় সময়ই অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করতো। তিনি বলেন, নিজে একটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে আসছে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই-চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
সোমবার রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে আশিককে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার দুপুরে র‌্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসব কথা বলেছেন।
র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, ধর্ষণের ঘটনা প্রচার পাবার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যায় আশিক। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার চাতুরী ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে তার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আশিককে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছে আশিক। ধারণা করা হচ্ছে পূর্বের শত্রুতার জের ধরে স্কুল ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে।
তার পুরো পরিবার অপরাধের সঙ্গে জড়িত দাবি করে র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, তার বড়ভাই ফারুখ গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও দুইকোটি টাকাসহ গ্রেফতার হয়েছিল। তার আরেক ভাই কামরুলের বিরুদ্ধেও ছিনতাই ইয়াবাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। আশিক কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় র‌্যাব দৃঢ় প্রতিজ্ঞ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, কক্সবাজার একটি বিশ্ব নন্দিত নগরী। এখানে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে জন্য র‌্যাব দৃঢ় অবস্থানে আছে। কিছু অপরাধীর কারণে কক্সবাজারের সুনাম নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। আমরা অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কোন অবস্থায় কক্সবাজারেকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে দেবে না বলে জানান তিনি।
স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আশিক ছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন মামলার এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি আশিকের বড় ভাই মো. কামরুল এবং ‘ধর্ষণের’ ঘটনাস্থল মমস গেস্ট হাউজের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহীন।
উল্লেখ্য, গেল ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত আশিকসহ ৩-৪ জন যুবক জোর করে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। শহরের হোটেল-মোটেল জোনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে মমস্ গেস্ট হাউজে দুইদিন আটকে রেখে তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আশিক। ১৫ ডিসেম্বর রাত আটটার দিকে বাড়ির সামনে রাস্তায় রেখে পালিয়ে যায় তারা। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করেন। এ ঘটনা প্রচার করলে মেয়ের পিতামাতাকে অপহরণ করে হত্যার পর গুম করার হুমকি দিতে থাকে। ভয় উপেক্ষা করে গেল ১৮ ডিসেম্বর কক্সবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ছাত্রীর বাবা। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার পেলে ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-১৫। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে আশিককে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, আশিকের বড়ভাই মো: কামরুল (৩৪) তার মা রাজিয়া বেগম (৫৫), বাবা নজরুল ইসলাম (৬০) এবং শহরের ঝাউতলা গাড়ির মাঠ এলাকার মো. হায়দার ওরফে হায়দার মেম্বারের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (৪০)।

ডিসি/এসআইকে/এফআরইউ-আরসি