এমপি মুরাদের বিরুদ্ধে চিকিৎসক স্ত্রীর যত অভিযোগ

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
‘ও (ডা. মুরাদ হাসান) আমাকে নির্যাতন করছে।  আমাকে মেরে ফেলবে বলেছে।  প্লিজ আমাকে বাঁচান।  ও আমাকে মেরে ফেলবে’।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে এভাবেই জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে জীবন বাঁচানোর আকুতি জানান সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান।
এরপর ডা. মুরাদ হাসানের ধানমন্ডির বাসায় যায় পুলিশ।  তবে সেখানে তারা মুরাদকে পায়নি।  পরে সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে মুরাদের বিরুদ্ধে জিডি করেন তার স্ত্রী।
জিডিতে জাহানারা এহসান অভিযোগ করেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে তিনি (ডা. মুরাদ) কারণে অকারণে আমাকে এবং সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করিয়া আসতেছে এবং হত্যার হুমকি প্রদান করিয়া আসিতেছে।  আজ ০৬/০১/২০২২ তারিখ সময় অনুমান ০২:৪৫ ঘটিকার দিকে পূর্বের ন্যায় আমাকে এবং আমার সন্তানদের গালাগাল করে এবং মারধর করার জন্য উদ্ধত হইলে আমি ৯৯৯-এ কল করিলে ধানমন্ডি থানা পুলিশ বাসার ঠিকানায় পৌঁছালে বিবাদী বাসা হইতে বাহির হইয়া যায়।  আমি এমতাবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় আছি।  বিবাদী আমাকে এবং আমার সন্তানদের যেকোনো সময়ে ক্ষতি সাধন করিতে পারে’।
জিডিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘বিবাদী মুরাদের সঙ্গে তিনি ১৯ বছর ধরে সংসার করে আসছেন।  তাদের সংসাদের রামিসা ফারিহা রাজকন্যা নামের ১৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।  এ ছাড়াও হাসান আবরার মাহির যুবরাজ নামের ১১ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে’।
এই দুই সন্তানকেও সংসদ সদস্য (এমপি) ডা. মুরাদ হাসান নির্যাতন করে আসছিলেন বলে ঐ জিডি কপিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে ধানমন্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া বলেন, মুরাদ হাসানের স্ত্রী আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩ টার দিকে ৯৯৯-এ কল করে তার হাসব্যান্ডের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেন।  আমরা বিষয়টা দেখছি।
একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ধানমন্ডির ১৫ নম্বর সড়কে ঐ বাসায় গিয়েছিল, তবে সেখানে মুরাদ হাসানকে তারা পাননি।
মুরাদ হাসানের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক।  অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে তা সম্ভব হয়নি।  অন্যদিকে মুরাদের ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
এক চিত্রনায়িকাকে টেলিফোনে হুমকি আর অশালীন বক্তব্যের ভিডিও ফাঁস হলে গত ডিসেম্বরে প্রতিমন্ত্রীর পদ হারাতে হয় মুরাদ হাসানকে।  জামালপুর আওয়ামী লীগের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয় স্থানীয় এই এমপিকে।  নানান নাটকীয়তার মধ্যে ৯ ডিসেম্বর রাতে কানাডার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন মুরাদ।  কিন্তু কানাডায় কিংবা আরব আমিরাতে ঢুকতে না পেরে দুদিন পর তাকে ফের দেশে ফিরতে হয়।  এরপর থেকে তিনি লোকচক্ষুর আড়ালে রয়েছেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ