দুই সংশোধনীতে ইসি নিয়োগ বিলের রিপোর্ট চূড়ান্ত

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
যোগ্যতা ও অযোগ্যতার দুই ধারায় কিছু সংশোধন এনে সংসদে উত্থাপিত নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইনের রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছে সংসদীয় কমিটি। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ নিয়ে আলোচনা শেষে সংসদে দেওয়ার জন্য প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। আগামি বুধবার সংসদ অধিবেশনে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে।
এর আগে রবিবার (২৩ জানুয়ারি) আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বিলটি সংসদে তোলেন। বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বিলটি উত্থাপনে আপত্তি তুললে কণ্ঠভোটে তা নাকচ হয়।
সংসদে উত্থাপিত বিলে সিইসি ও কমিশনারদের যোগ্যতা সংক্রান্ত ধারায় পরিবর্তন করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। ৫(গ) ধারায় বলা আছে, সিইসি ও কমিশনার হতে গেলে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই ধারায় সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশা’ ‍যুক্ত করা হবে।
আর অযোগ্যতার ক্ষেত্রে ৬ (ঘ) ধারায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এখন সেখানে বলা আছে, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না। এখানে দুই বছরের কারাদণ্ড উঠিয়ে দিয়ে শুধু কারাদণ্ডের সুপারিশ করা হয়েছে। অর্থাৎ, নৈতিক স্খলন ফৌজদারি অপরাধে যেকোনো মেয়াদের সাজা হলেই সিইসি বা কমিশনার হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগত্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার সাংবাদিকদের এসব পরিবর্তনের বিষয়ে জানান। তিনি বলেন, ‘সংসদীয় কমিটি বিস্তারিত আলোচনা করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। আমরা যোগ্যতা ও অযোগত্যার জায়গায় কিছু পরিবর্তন এনেছি। সেভাবেই সংসদে প্রতিবেদন দেওয়া হবে’।
তিনি বলন, ‘দুই বছরের কারাদণ্ডের জায়গাটা পরিবর্তন করা হয়েছে। দুই বছর উঠিয়ে দিয়ে কারাদণ্ড করে দেওয়া হয়েছে। আর সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশা’ ‍যুক্ত করার জন্য সুপারিশ করেছি’।
সংসদে উত্থাপিত বিলটিকে আগের সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশনকে ‘বৈধতা’ দেওয়া হচ্ছে বলে যে আলোচনা রয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদুজ্জামান বলেন, ‘ইনডেমনিটি বলছে অনেকে। ইনডেমনিটি নয়। বিলের ৯ দফায় কিন্তু আগের দুটো সার্চ কমিটির বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ওই দুই সার্চ কমিটিকে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে। একটা লিগ্যাল সাপোর্ট দেওয়া। সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতি ঐক্যমতের ভিত্তিতে করেছিল। সেটাকে সাপোর্ট দেওয়া হলো। কোনো দায়মুক্তি নয়। আর আইনটা কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে। সার্চ কমিটির আইন নয়’।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগের দুটো কমিশনের কার্যক্রমকে হেফাজত দেওয়ার বিষয় এখানে আসেনি। শুধু সার্চ কমিটির বৈধতা দেওয়া হয়েছে’।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতোপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলে গণ্য হবে এবং উক্ত বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না’।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ