চবি উপাচার্যসহ চারজনকে হাইকোর্টের শোকজ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও অন্য বিভাগের শিক্ষককে সভাপতি রাখার ব্যাখ্যা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারসহ মোট চারজনকে শোকজ (কারণ দর্শানোর নোটিশ) করেছে হাইকোর্ট।  পাশাপাশি আইন মেনে ওই বিভাগে সভাপতি নিয়োগের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
রবিবার (১৩ মার্চ) হাইকোর্টের এ নির্দেশনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছে।  এতে গত বছরের ২৪ নভেম্বর রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানো আবেদনটি ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে বাস্তবায়ন করারও নির্দেশ দেয়া হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এসএম মনিরুল হাসান।  তিনি বলেন, আমাদের কাছে আনঅফিশিয়ালভাবে একটা রিট পিটিশন পাঠানো হয়েছে।  এতে হাইকোর্ট আমাদের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন।  আইন মোতাবেক সব করা হচ্ছে।
এর আগে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিধি লঙ্ঘন করে অন্য বিভাগের শিক্ষককে সভাপতি রাখার অভিযোগে হাইকোর্টে রিট করেন ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেনসহ তিন শিক্ষক।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের যাত্রা শুরু হওয়ার পর সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ১ম বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।  পরে ২০১৮ প্রভাষক (স্থায়ী পদে) হিসেবে ওই বিভাগে যোগদান করে তিন শিক্ষক।  অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী অবসরে গেলে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বিভাগীয় সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।  এরপর ২০২০ সালের ২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এবিএম নাজমুল ইসলাম খানকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে সভাপতি হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।  এরমধ্যে গত বছরের ৩০ মে বিভাগটির দুইজন প্রভাষক থেকে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে বিভাগে যোগদান করে।  পরে গত বছরের ২৪ নভেম্বর সভাপতিকে মাধ্যম করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর সংবিধির ধারা ৭ অনুযায়ী, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে বিভাগীয় শিক্ষকদের মধ্য থেকে সভাপতির দায়িত্ব প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার নিমিত্তে একটি পত্র প্রদান করা হয়।
তবে কর্তৃপক্ষ সেই আবেদন অগ্রাহ্য করে ড. এবিএম নাজমুল ইসলাম খানকেই বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে মেনে নিতে পরামর্শ দেন বলে অভিযোগ করেন বিভাগটির তিন শিক্ষক।  এর প্রেক্ষিতে গত ২৮ ফেব্রæয়ারি বিভাগীয় দুইজন শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায়, নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ড. এবিএম নাজমুল ইসলাম খানকেই বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে বহাল রাখা চবি অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর সংবিধির ধারা ৭ সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট করেন সহকারী অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেনসহ তিন শিক্ষক।

ডিসি/এসআইকে/এনএনবি