উত্তর পাহাড়তলীর ত্রাসরূপে আবির্ভূত কে এই জুয়েল!

বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
একেবারে সরকারি স্ট্যাম্পে ‘সরকারি খাসজমি’ উল্লেখ করে সরকারি পরিত্যক্ত ভূমি প্লট আকারে বিক্রি, ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী- প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবি, চলমান চাঁদার টাকার পরিমাণ বাড়াতে নানান সন্ত্রাসী কায়দায় চাপ সৃষ্টি, ফুটপাত থেকে শুরু করে অলিতে-গলিতে ভাসমান দোকান বসিয়ে ভাড়া আদায়, ব্যাপকহারে শিশু-কিশোরদের বিপথে নেয়া, তাদের দিয়ে কিশোর গ্যাং তৈরি করে অলিতে-গলিতে নিজের নেতৃত্ব প্রকাশ, প্রাথমিক সদস্যপদ না থাকলেও নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় দেয়া, অবৈধভাবে অস্ত্রের ব্যবহার, পরিবেশ বিপর্যয়কর পাহাড় কাটার কন্ট্রাক্টরি, সরকারি বনায়নের এবং সরকারি জমিতে কয়েকদশকে গড়ে ওঠা বিশালাকার গাছ কাটা ও বিক্রি, সাধারণ কোনো মানুষ নিজের মালিকানাধীন ভূমিতে বাড়ি করতে গেলে চাঁদা নেয়া, চলাচল পথ নেই- এমন জমির মালিকদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে অন্যের জমির উপর দিয়ে অবৈধ ও অন্যায়ভাবে সড়ক তৈরিতে প্রভাব খাটানো, মানুষের চলাচলের পথ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবৈধভাবে সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড বসিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানান অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।  এক সময়ের ডাকাত হিসেবে পরিচিত এই তথাকথিত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (!)’র নাম মো. বেলাল উদ্দিন জুয়েল।  এলাকায় এখন অন্যতম আতঙ্ক ৩১ বছর বয়সী এই যুবক।  কেউ প্রতিবাদ করলেই ছুড়ি, চাপাতি, কিরিচ কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করা তার নিয়মিত কাজ।  দিনে দিনে এলাকার ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে কিশোরদের পরিবারের জন্য ত্রাসরূপে আবির্ভূত এই যুবকের অতীত ইতিহাসও ইতিবাচক নয়।
যদিও বেলাল উদ্দিন জুয়েল সবগুলো অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে বলেছেন, সাংগঠনিকভাবে আমাকে মোকাবেলা করতে না পেরে নানানভাবে আমাকে হয়রানি আর ইমেজ নষ্টের জন্য এসব করছে আমাদের চিহ্নিত বিরোধীপক্ষ।
চট্টগ্রাম নগরের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা পরিচয় দেয়া এই জুয়েলের নামে রয়েছে ডজনখানেক মামলাও।  তারমধ্যে অন্তত ৮টি মামলার নথি হাতে পেয়েছে দৈনিক চট্টগ্রাম।  তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোর অধিকাংশই অস্ত্র, ডাকাতি চাঁদাবাজি, চুরি, হত্যাচেষ্টার।  উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের বিশ্বকলোনীর এইচ ব্লকের সিড়িরগোড়া এলাকার আব্দুল বাতেনের ছেলে জুয়েল প্রকাশ ডাকাত জুয়েলের আদিবাড়ি চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে বলে বিভিন্ন মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে।
সরেজমিনে পরিদর্শন, একাধিক বিশ্বস্তসূত্র, কুমিল্লার দাউদকান্দি থানা, চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ থানা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতে দায়ের করা মামলার বিবরণ, তার দ্বারা ভুক্তভোগী এবং স্থানীয় অধিবাসীদের দেয়া তথ্য থেকে কথিত যুবলীগ নেতা বেলালের বিরুদ্ধে উপরোক্ত অভিযোগগুলো পাওয়া যায়।  শুধুমাত্র আকবরশাহ থানাতেই তার বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য সাধারণ ডায়েরি, অভিযোগ ও মামলা।  বেলাল উদ্দিন জুয়েল এলাকায় কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ২য় যুগ্ম আহবায়ক জহুরুল আলম জসিমের ডান হাত এবং অনুসারী বলে পরিচিত।  তার মোবাইল নম্বরে ট্রু কলারে ফোন দিলে সেখানেও তার পরিচয় হিসেবে ভেসে ওঠে ‘জুয়েল জসিম ভাইয়া পারসন’ নামে।  মূলত কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের বলয়ে এবং প্রশ্রয়ে বেলাল উদ্দিন জুয়েল নানান অপরাধে যুক্ত বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।  এমনকি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক (১ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক) সৈয়দ সরোয়ার মোর্শেদ কচিও জুয়েলের নানান অপরাধকর্মের বিষয়গুলো স্বীকার করেন।  তবে জুয়েল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ কিংবা ছাত্রলীগসহ কোনো সহযোগী সংগঠনের সদস্যপদেও নেই বলে তিনি জানান। কাউন্সিলরের বলয়ে থেকে সে দলের পরিচয়ে এসব অপরাধ কর্ম করছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিগত প্রায় ১২-১৩ বছর ধরে বিশ্বকলোনীতে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ সরকারি পাহাড়ি কিংবা পরিত্যক্ত জমি অন্যের কাছে স্ট্যাম্পমূলে টাকার অংক উল্লেখপূর্বক দখল হস্তান্তর কিংবা মৌখিক চুক্তিতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দখল করিয়ে দেয় জুয়েল।  সরকারি সম্পত্তি বেআইনীভাবে বিক্রি ছাড়াও সরকারি জায়গায় করা বনায়ন কিংবা পরিত্যক্ত সেসব জায়গায় যুগ যুগ ধরে গড়ে ওঠা গাছ কাটা এবং তা বিক্রি, মসজিদের নামে সরকারি জায়গা দখল করা তার অনেক অপরাধের অন্যতম।  ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে ৭ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকায় সরকারি খাস ভূমি বিক্রির একাধিক দলিলও হাতে এসেছে এই প্রতিবেদকের।  সর্বশেষ চলতি মার্চ মাসের ৭ তারিখে আকবরশাহ থানাধীন বিশ্বকলোনীর এইচ ব্লকে স্থিত গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন জায়গা ৬ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন বেলাল উদ্দিন জুয়েল।  সেই জায়গা (এইচ ব্লকের দক্ষিণ পাশে এবং আল হেরা মসজিদের পশ্চিম পাশের ভুঁইয়া ম্যানশন সংলগ্ন ৩৭৮ ও ৩৭৯ দাগের প্লটটি) সরকারি সম্পত্তি।  ওই খালি জায়গাটি পার্কিং ও গ্রীণ স্পেস হিসেবে পরিচিত।  সেখানে এলাকার শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করে।  এছাড়াও এলাকার বাসিন্দাদের প্রয়োজনে পারিবারিক ছোট সামাজিক অনুষ্ঠানাদি; বিশেষ করে মৃত ব্যক্তিদের গোসল কার্যসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে।

এলাকায় শো-ডাউনরত বেলাল উদ্দিন জুয়েল (লালবৃত্ত)

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই সরকারি জায়গাটি কানু বাবু নামক একজনের কাছে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন বেলাল উদ্দিন জুয়েল।  এই টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়েছে জুয়েল এবং তার শ্বশুর সিদ্দিক ও জুয়েল গ্রুপের জায়গা দখল কাজে যুক্ত বখাটেদের মধ্যে।  স্থানীয়রা আকবরশাহ থানা, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ একাধিক প্রশাসনিক দপ্তরে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।  
নানান অপরাধে যুক্ত বেলাল উদ্দিন জুয়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র, ডাকাতিসহ একডজনের মতো মামলার হদিস পাওয়া গেছে।  এরমধ্যে কুমিল্লায় অস্ত্রসহ ধরা পড়ায় তার বিরুদ্ধে দাউদকান্দি মডেল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয় ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে (মামলা নং ১২/২০১৪)।  বাকী মামলাগুলোর অধিকাংশই সিএমপির আকবরশাহ থানায় হয়।  অধিকাংশ মামলাই হয় ২০১৯ সালে।
এরমধ্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আকবরশাহ’র গোলপাহাড়ের শারিরীক প্রতিবন্ধী মো. জোবায়ের হোসেনের দায়ের করা মামলায় (নং০৪/২০১৯) উল্লেখ করা হয়- একই এলাকার গোল পাহাড়ের মো. জসিম উদ্দিন এবং বেলাল উদ্দিন জুয়েলসহ মোট ৯/১০ জনের সন্ত্রাসী দল তাদের ইট, বালু, সিমেন্ট ও রডের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন সময় ভয়-ভীতি দেখিয়ে বাকিতে মালামাল নিয়ে আত্মসাত করার কারণে সেই টাকা ফেরত না দিতে ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তাদের উপর দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।  এতে জোবায়েরের পা ভেঙে যাওয়াসহ দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়।  এই ঘটনায় দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলাটি আকবরশাহ থানায় করতে গিয়ে অভিযুক্ত জুয়েলের রাজনৈতিক গুরুর (কাউন্সিলর) প্রভাবে তা করতে না পেরে আদালতে মামলাটি করেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। পরে মামলাটি আকবরশাহ থানায় গ্রহণের জন্য আদালত কর্তৃক আদেশ হলে আকবরশাহ থানা মামলাটি রেকর্ডভুক্ত করে যার নম্বর ২২, তারিখ ১৬/২/২০১৯।  পরে মামলার বিবরণ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণেরও আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ধীমান মজুমদার।
২০১৯ সালের ১ মার্চ আকবরশাহ থানা এলাকায় এক ডিস ব্যবসায়ী চাঁদা দেয়া বন্ধ করে দিলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেলাল ও তার সঙ্গীরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা ও জখমের জন্য আকবরশাহ থানার ০২/২০১৯ নম্বর মামলায় বেলালের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায় পুলিশ।  এই মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয় যার নম্বর ৪৫৮।  মামলাটির বাদী সাখাওয়াত হোসেন তানভির দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, বর্তমানে চার্জশীট হওয়া মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
এছাড়াও ২০১৯ সালের ১০ মার্চ তারিখে হোসনে আরা মনি নামের এক নারী তার কিশোর ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা, জখম এবং চুরির অভিযোগ এনে বেলাল উদ্দিন জুয়েলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন যার নম্বর ১৪/১৯।  ওই মামলাটির সত্যতা পাওয়া যাওয়ার তথ্য পুলিশি প্রতিবেদনে উঠে আসায় ওই নারীকে অব্যাহত হুমকি, গুম, সন্তানকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে মামলাটি তুলে নিতে বাধ্য করে বলে জানান সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।  ভুক্তভোগী হোসনে আরা মনি দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, একই এলাকায় থাকি, ছেলের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যত বিবেচনা করে আমি মামলাটি আপোষ করে তুলে নিয়েছি।  এছাড়াও একই বছরের ১১ মার্চ তারিখেও তার বিরুদ্ধে মো. জাহেদ নামের এক ব্যক্তি আরেকটি মামলা করেন যার নম্বর সিআর ৫১/১৯।

একটি অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের পাশে দাঁড়িয়ে বক্তব্যরত বেলাল উদ্দিন জুয়েল।

২০২০ সালে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানাধীন আসকারদিঘী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ধর্মেন্দু দাশ কোতোয়ালী থানার ৬৯/২০ নম্বর মামলার আসামি উসমান ও আরিফকে আকবরশাহ থানাধীন লেকসিটির বিজয় নগর থেকে ৩০ নভেম্বর তারিখে গ্রেফতার করে।  এসময় উসমানের কাছ থেকে গুলি লোড করা অবস্থায় অস্ত্র জব্দ করেন তিনি।  এই ঘটনায় ৩০ নভেম্বর কোতোয়ালী থানায় তাদের বিরুদ্ধে আরো একটি অস্ত্র মামলা হয়।  পুলিশের সেই মামলায় উল্লেখ করা হয় গ্রেফতার আসামিরা সেই অস্ত্র বেলাল উদ্দিন জুয়েলের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে।
২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি আকবরশাহ থানার ০৬ নম্বর মামলার প্রধান আসামি বেলাল উদ্দিন জুয়েল।  সেই মামলায় একজন তরুণ আইনজীবীকে ২ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে না পেয়ে রাস্তায় দেশিয় অস্ত্র কিরিচসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।  এই মামলায় বেলাল ছাড়াও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর আরো ৭ জনের নাম উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী আইনজীবীর বাবা বাদী মুহাম্মদ আবু তাহের মাস্টার।  পুলিশও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বেলাল উদ্দিন জুয়েল ও অন্য আসামিদের খারাপ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক বলে প্রতিবেদক দাখিল করে।  একই তারিখে অর্থাৎ ৫ ফেব্রুয়ারি আকবরশাহ থানাধীন বিশ্ব কলোনীর আরেক অধিবাসী মো. শহীদুল ইসলাম বাদি হয়ে বেলাল উদ্দিন জুয়েলকে প্রধান আসামি করে হানিফ অ্যান্ড ব্রাদার্স এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দাবি এবং তাতে রাজি না হওয়ায় পথরোধ করে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে বাদীর ভাইকে মারাত্মক জখম এবং তার কাছে থাকা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫০ হাজার টাকা লুট করার দায়ে মামলা করেন।  মামলায় বেলাল ছাড়াও আরো ৪ জনের নাম উল্লেখ এবং তার বাহিনীর অজ্ঞাত আরো ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্থানীয় হিলভিউ নেটওয়ার্ক নামের ডিস ব্যবসায়ী মো. গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে বেলাল উদ্দিন জুয়েল নিয়মিত চাঁদা ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার জন্য চাপ দিলে তিনি তাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।  এক পর্যায়ে গিয়াস উদ্দিনের কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে বেলাল।  না হলে প্রাণনাশের হুমকি, এলাকায় ডিস ব্যবসা থেকে বিতারিত করার হুমকি দিলে গিয়াস উদ্দিন আদালতে সাধারণ ডায়েরি করেন (নং ২৩৮/২২)।  জিডি করার পর ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়াস উদ্দিনের কর্মচারীদের ভয়ভীতি, কাজ করার সময় কর্মস্থলে গিয়ে মারধর ও ছুরিসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জখম, ডিসের লাইন কেটে দিয়ে মূল্যবান সংযোগ মেশিনাধিসহ বিভিন্ন ধরণের মালামাল লুট, ১৭ হাজার টাকা মূল্যমানের তিনটি মোবাইল, নগদ ৩০ হাজার টাকা জোর করে লুট করায় চট্টগ্রাম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন যার নম্বর সিআর ৩৪/২০২২।
একই ধরণের চাঁদাবাজি ও লুটপাটের শিকার হন আরেক ডিস ব্যবসায়ী মো. শফি।  দীর্ঘদিন ধরে বেলাল উদ্দিন জুয়েলের হুমকি-ধমকি এবং নিজের ব্যবসার সুরক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে জুয়েল বাহিনীকে মাসে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দেয়া মো. শফিকে ২০২২ সাল থেকে সেই চাঁদার পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা করার চাপ দেয় জুয়েল।  এতে রাজি না হওয়ায় হুমকি-ধমকি ও খুন-গুম, পরিবারের ক্ষতি করার হুমকি দিলেও তিনি মাসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে পারবেন না বলে জানালে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি তারিখে জুয়েলসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর মোট ৭ জন দলবদ্ধভাবে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।  সেখানে থাকা কর্মচারীদের মারধর করে ডিসের লাইন কেটে সেখানে লুটপাট চালায়।  সেদিন প্রায় পৌনে ১৩ লক্ষ টাকা মূল্যমানের মেশিনারিসহ সংশ্লিষ্ট মালামাল লুট করে বেলাল উদ্দিন জুয়েল, যা সিসি টিভি ফুটেজেও ধরা পড়ে।  এই ঘটনায় তিনি থানায় মামলা করতে গেলে স্থানীয় কাউন্সিলরের প্রভাবে মামলা করতে না পারায় আদালতে সিআর মামলা দায়ের করেন (নং ৩৩/২০২২) বলে জানান মো. শফি।  বর্তমানে মামলাগুলো আকবরশাহ থানায় প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে।  শুধু তাই নয়, নিয়মিত চাঁদা না পাওয়ায় এক পর্যায়ে নিজেই ডিস ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য গিয়াস ও শফির চলমান বিশ্ব কলোনীর এইচ, সি এবং জি ব্লক এবং নন্দন হাউজিং এর নিয়ন্ত্রণ জুয়েলের কাছে ছেড়ে দিতেও হুমকি-ধমকি দেয়ার এ পর্যায়ে তাদের লাইন কেটে সেসব মেশিনে সে অন্য লাইন ঢুকিয়ে সেই ব্লকগুলো নিয়ন্ত্রণে নেয় জোড় করেই।  এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে বিচাল-শালিসও হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বেলাল উদ্দিন জুয়েল স্থানীয় কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিমের নাম ভাঙিয়ে একটি চক্র গড়ে তুলেছে যারা এলাকায় কিশোর গ্যাং তৈরির মাধ্যমে উঠতি কিশোরদের বিপথে নিচ্ছে।  তাদের দ্বারা ছিনতাই, চুরি, জায়গা দখলের কন্ট্রাক্টরি, পাহাড় কাটার ঠিকাদারি, সরকারি জমি বিক্রি ও দখল বুঝিয়ে দেয়া, ফুটপাতে দোকান বসিয়ে ভাড়া আদায়, অবৈধভাবে সিএনজি স্টেশন বানিয়ে চাঁদাবাজি, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা থেকে চাঁদা আদায়, এলাকায় কেউ স্থাপনা নির্মাণ করতে গেলে প্রভাব দেখিয়ে চাঁদা আদায়, ডিস ব্যবসায়ী, ঠিকাদারসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা আদায়ে ব্যবহার করা হয়।  বেলাল উদ্দিন জুয়েলের বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তার কপালেও নেমে আসে ভয়াবহতা।  তার প্রশ্রয়দাতা হিসেবে স্থানীয় কাউন্সিলরের নাম থাকায় ভুক্তভোগীরা আরো বেশি ভয়ে থাকেন। অন্যদিকে প্রতিবাদকারীদের বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ, মামলা-হামলা ও প্রাণনাশের হুমকি থাকে জুয়েল বাহিনীর।  সব মিলিয়ে জুয়েল ও তার বাহিনীর অত্যাচারে চরম অস্থিরতার মধ্যে দিনযাপন করছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা আরো জানান, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ ক্ষমতাসীন দলের প্রাথমিক সদস্যপদ না থাকলেও এলাকার কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিমের ছত্রচ্ছায়ায় নিজস্ব বাহিনী তৈরি করে রীতিমতো রামরাজত্ব কায়েম করেছে এই বেলাল উদ্দীন জুয়েল।  তার এ বাহিনীতে রয়েছে পুলিশের তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসীরাও।  কাউন্সিলরের ছত্রচ্ছায়ায় যুবলীগ নেতা; এমনকি ভূঁইফোর মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ নামের একটি সংগঠনের ওয়ার্ড সভাপতি পরিচয় দিয়ে নানান অপকর্ম করছে জুয়েল।  আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের মুখচেনা ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সাথে ছবি তুলে কিংবা কারণে অকারণে ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগের নেতা পরিচয়ে দেখা করে ছবি তোলা ও সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে, নিজের অফিসে ও বাসায় বাঁধিয়ে এসব অপকর্ম করছে জুয়েল।

২০১৯ সালে একটি মামলায় ১ মাস ১৬ দিন কারাভোগের পর জামিনে বের হলে ফুলের মালা দিয়ে বেলাল উদ্দিন জুয়েলকে বরণ করে কাউন্সিলর জসিমের সমর্থকেরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এলাকায় ঘর-বাড়ি তৈরি করতে হলে বেলালকে টাকা দিতে হয়।  তার মাধ্যমেই নির্মাণসামগ্রী কিনতে হয়।  না হলে জায়গা কিনলেও ঘর করা যাবে না।  করতে গেলে হামলা-মামলার হুমকি দেন।  এমন অভিযোগ করেছে আরো অনেকে।
উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আবদুল ওয়াজেদ খান রাজিব বেলাল উদ্দিন জুয়েল সম্পর্কে দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ‘বেলাল উদ্দিন জুয়েল যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাং, সরকারি পাহাড় কাটা, সরকারি জমি টাকার বিনিময়ে দখল করিয়ে দেয়াসহ নানান অপরাধ করছে সেটা আমি স্বীকার করছি।  প্রথমত জুয়েল আমার সংগঠনের কোনো পর্যায়ের সদস্য নন।  সেই জন্য তার ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।  তবে যেহেতু জুয়েল আমার সংগঠনের আমার শাখার নেতা পরিচয় (ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা) দিয়ে নানান অপরাধ সংঘটিত করছে, সেহেতু আমি সভাপতি হিসেবে বিষয়টি বিভিন্ন সময় আমার থানা, মহানগর নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি।  এছাড়াও যতবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, মামলা হয়েছে, সেসব মামলায় তাকে ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা বলা হয়েছে, তখন আমরা প্রশাসনকেও বিষয়টি অবহিত করেছি যে তারা যেনো ব্যবস্থা নেন।  আমাদের পক্ষে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদও নেই- এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতাতো নেই’।

দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে নানান অপরাধে যুক্ত জুয়েলের বিষয়ে জানতে চাইলে ৯নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সৈয়দ সরোয়ার মোর্শেদ কচি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ‘বেলাল উদ্দিন জুয়েল ছেলেটার বিষয়ে আপনি যেসব অভিযোগ তুলে ধরেছেন তা আপনার মতো আমারও জানা আছে।  আমি আপনার জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই- আমি খোঁজ নিয়েছি, এই ছেলেটি আমাদের ইউনিট, ওয়ার্ড, থানা কিংবা নগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ কিংবা সহযোগি অন্য কোনো সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যও নয়।  সেই অর্থে তার এসব অপরাধের দায়ভার আমরা নিতে পারি না। তবে দলের নেতৃত্বে যেহেতু আছি সে জন্য আমি বিষয়টি নিয়ে আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এমনকি এই ছেলেটিকে যে লালন-পালন করে কিংবা নিজের কাজে ব্যবহার করে কিংবা পৃষ্ঠপোষকতা দেয়, আমাদের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক জহুরুল আলম জসিমকেও অনেকবার বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়েছি।  কিন্তু কোনো ব্যবস্থা তিনি নেননি।  এই বিষয়ে আমরা আমাদের নগর এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নেতৃবৃন্দকেও অবগত করেছি।  জুয়েল ছেলেটির চাঁদাবাজি, পাহাড় কাটা, সরকারি প্লট দখল করে বিক্রি, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে হামলা-মামলা কিংবা অস্ত্রবাজি- সবকিছুই কিন্তু সে করছে কাউন্সিলর জসিমের ছত্রচ্ছায়ায়।  তাদের অপরাধের এই মাত্রা সম্প্রতি আরো বেড়েছে।  শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে কথা বলায় আমার বিরুদ্ধেও তার চেনা ও সম্পর্ক থাকা কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়েছে।  বিষয়গুলো আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ অবগত।  যখনই সে কোনো অকারেন্স (ঘটনা) ঘটায় তখনই আমাদের সংগঠনের বা সহযোগী সংগঠনের নাম ব্যবহার করে।  তাই আমরা সাথে সাথে প্রশাসনকে জানাই যে- ছেলেটি সংগঠনের কেউ নয়।  দলের নাম বিক্রি করছে।
বেলাল উদ্দিন জুয়েল সম্পর্কে আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আলতাফ হোসেন দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, এই ছেলেটির বিষয়ে আপনি যা শুনেছেন, এলাকার বাসিন্দা হিসেবে আমিও তা শুনেছি।  সে কিন্তু আমাদের দলের কোনো সংগঠনেরও কেউ নয়।  মূলত ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর একই অঞ্চলের বাসিন্দা (সন্দ্বীপ উপজেলা) হওয়ার সুবাধে ছেলেটিকে সব ধরণের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার মাধ্যমে ছেলেটি এখানে পুনর্বাসিত হয়েছে।  সন্দ্বীপের এমপি সাহেবের সাথে নাকি তাদের ভালো সম্পর্ক।  এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি/ব্যক্তিদ্বয়ের কারণে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, সাধারণ মানুষের কাছে সংগঠন প্রশ্নবিদ্ধ হবে, সেই সমস্ত লোক যাতে আমাদের ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ কোনো সংগঠনের কমিটিতে না আসে সে ব্যাপারে আমরা সজাগ আছি।
অপরাধে যুক্ত থাকা ও নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বেলাল উদ্দিন জুয়েল দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে কিছু মামলা হয়েছে সেগুলো রাজনৈতিক; সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে’।  এতো পদবীধারী নেতা থাকতে আপনি দলের কোনো সদস্যপদেও নেই- সবাই কেন খালি আপনার বিরুদ্ধে কাজ করবে, আপনিতো গুরুত্বপূর্ণ কেউ নন, তাহলে কেনই বা আপনার বিরুদ্ধে এতো মামলা হয়- এমন প্রশ্নের জবাবে জুয়েল বলেন, ‘ভাই এগুলো আমাকে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলতে করা হয়েছে।  অস্ত্র নিয়ে ধরা পড়েছি ঠিক আছে, কিন্তু যিনি আমাকে অস্ত্র দিয়েছিলেন তিনি আমাকে বিপদে ফেলেছেন, সেগুলো যে অবৈধ সেটা জানতাম না।  এই মামলাটা আমার জীবনটাকে শেষ করে দিছে।  আর পরবর্তীতে যে ১২/১৫টা মামলা আমার বিরুদ্ধে হইছে সেগুলো ভাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।  আমাকে সাংগঠনিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে তারা আমার ইমেজ নষ্ট করতে, আমাকে কমিটিতে আসতে না দিতে এগুলো করতেছে।  গত চসিক নির্বাচনের আগে আমাকে তুলে নিয়ে গেছিল, আল্লাহ’র রহমতে ভাই আমার জীবন নিয়ে ফিরে আসছি।  আমাকে ক্রসফায়ারে দিতো।  এই নিউজ হলে ভাই আমি খুব বিপদে পড়ে যাবো।  ভাই আপনি নিউজটা করিয়েন না।  সামনে আমাদের যুবলীগের কমিটি আসবে।  আমার একটা সম্ভাবনা আছে।  সেটা ভাই নষ্ট হয়ে যাবে’।
এই বিষয়ে জানতে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের আওতাধীন কৈবল্যধাম হাউজিং এস্টেটের দেখভালের দায়িত্বে থাকা স্টেট ম্যানেজার আবু জাহানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।  পরে মুঠোফোনে এসএমএস করেও তার কোনো সাড়া না পাওয়ায় এই বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সিএমপির পশ্চিম জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল ওয়ারীশ দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, ‘সাধারণত আমরা কারো বিরুদ্ধে থানায় অথবা আদালতে মামলা হলে আদালত কর্তৃক আদেশিত হয়ে সেটি তদন্ত করি এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়ে দেই।  যে বা যাদের বিরুদ্ধে থানায় কোনো লিখিত জিডি বা অভিযোগ আসে সেগুলো আমরা যথাযথভাবেই তদন্ত করি।  দেখা যায় অনেকে অভিযোগ করেন, কিন্তু তদন্তে সহায়তা করেন না।  তখন আমরাতো অভিযুক্তের বিষয়ে আর এগুতে পারি না।  আর যে সমস্ত মামলা থানায় বা আদালতে হয় সেগুলো থানার আওতায় আসলে আমরা তদন্ত করি, সংশ্লিষ্ট আসামিকে গ্রেফতার করি।  সে আদালত থেকে আইনী প্রক্রিয়ায় ছাড়া পেলে তখন আমাদের কিছু করার থাকে না।  তবে আমরা চেষ্টা করছি, কোনো অপরাধীই যাতে মানুষের শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটাতে পারে সে বিষয়ে কঠোর থাকতে।  যে কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করবে কিংবা সাধারণ মানুষ বা রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধনে যুক্ত থাকবে তাদের ব্যাপারে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।

ডিসি/এসআইকে/আরসি