দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
‘অর্থ পাচার নিঃসন্দেহে আইনের শাসন এবং দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য মারাত্মক হুমকি। মানি লন্ডারিং এখন একটি গুরুতর অপরাধ’। অর্থ পাচার আইনের এক মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে সোমবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন এসব কথা বলেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণের বিচারক আরো বলেন, লন্ডারিং এখন একটি গুরুতর অপরাধ। ক্যাসিনো জুয়া এবং ব্যবসা মূলত সংগঠিত অপরাধের জন্য নোংরা আর্থিক ব্যবস্থায় অর্থ পাচারের জন্য একটি পিছনের দরজা হয়ে উঠেছে।
আদালত বলেন, অবৈধ জুয়ার কার্যক্রম বিশেষভাবে গুরুতর। কারণ অবৈধ জুয়া থেকে অর্জিত অর্থ পাচার, চাঁদাবাজি এবং জালিয়াতি সহ অন্যান্য কার্যকলাপে অর্থায়নের জন্য ব্যবহৃত হয়। যদি মানি লন্ডারিং অপরাধগুলো নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তাহলে মানি লন্ডারিং আর্থিক ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং উদীয়মান বাজারে উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই উপযুক্ত শাস্তি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অর্থ পাচারের অপরাধ থেকে বিরত রাখতে পারে।
এর আগে রাজধানীর ওয়ারী থানার অর্থ পাচার আইনের মামলায় ক্যাসিনো কান্ডে আলোচিত পুরান ঢাকার দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও রুপন ভূঁইয়াসহ ১১ জনের সাত বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। পাশাপাশি চার কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, রশিদুল হক ভূঁইয়া, সহিদুল হক ভূঁইয়া, পাভেল রহমান, তুহিন মুন্সি, আবুল কালাম আজাদ, নবীর হোসেন শিকদার ও সাইফুল ইসলাম। আসামিদের মধ্যে শিপলু, রশিদুল, সহিদুল ও পাভেল মামলার শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। তুহিন জামিনে আছেন। অপর ৬ আসামি কারাগারে আছেন।
২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনো খেলা পরিচালনাকারী এনুর কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের ওয়ারীর লালমোহন সাহা স্ট্রীটের বাড়ি ঘেরাও করে র্যাব। কালামের স্ত্রী ও মেয়ের দেখানো মতে ৪র্থ তলার বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার করে র্যাব। এ ঘটনায় র্যাব-৩ এর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যান জিয়াউল হাসান ২৫ নভেম্বর ওয়ারী থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, এনু ও রুপন দীর্ঘদিন ক্যাসিনো পরিচালনার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে আসছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান পরিচালিত হলে, তারা নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার জন্য অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ গোপন করতে কালামের বাসায় রেখেছিল। কালাম সেগুলো নিজের কাছে রাখে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের অপরাধ।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২১ জুলাই ১১ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ছাদেক আলী।
গত বছরের ৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
ডিসি/এসআইকে/এমএসএ