বাংলাদেশের অনুরোধেই পি কে হালদারকে গ্রেফতার : অ্যাটর্নি জেনারেল

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে বাংলাদেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সরকার পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।  বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা তাদের জানিয়েছিল অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি সেখানে অবস্থান করছেন।  সে তথ্যের ভিত্তিতে পি কে হালদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  এখন তাকে বাংলাদেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
পি কে হালদার গ্রেফতারের পরের দিন রবিবার (১৫ মে) সুপ্রিম কোর্টের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তির আলোকে পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ রয়েছে।  তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  কারণ সে জনগণের টাকা পাচার করেছে।  ভারতে বিভিন্ন জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অবস্থান করে আসছিলেন।  সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়।  কিন্তু আমাদের যে অর্থপাচারের বিষয়টা, আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয় আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।  সেই মামলায় তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।  আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে এ আইন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের এজেন্সিগুলোর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিকে পি কে হালদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  বাংলাদেশের সংস্থাগুলো পি কে হালদারের বিষয়ে তৎপর।  তৎপরতার কারণেই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।  আমাদের দেশের যে টাকা ভারতে পাচার করা হয়েছে।  আমরা তা ফেরত আনার চেষ্টা করবো।  কারণ এটা জনগণের টাকা।
অন্যদিকে, প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন বলে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) ইমিগ্রেশন শাখা।
২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিটে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান পি কে হালদার।  যদিও পালিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই পি কে হালদার যাতে বিদেশ যেতে না পারেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এমন চিঠির কপি পায় বেনাপোল স্থলবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশ।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, পি কে হালদার যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য এসবি পুলিশকে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর চিঠি দেয় দুদক।  ইমিগ্রেশন পুলিশকে সতর্ক করতেই চিঠি দেওয়া হয়।  দুদকের এ চিঠি ডাকযোগে পাঠানো হয়।  এর পরদিন ২৩ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪ টায় চিঠি পায় এসবির সদরদফতর।  এরপর সদরদফতর থেকে এসবির সব ইমিগ্রেশন ইউনিটকে ওইদিনই বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিটে মেইলে এ চিঠি পাঠানো হয়।  কিন্তু চিঠি পাওয়ার দুই ঘণ্টা ৯ মিনিট আগেই বাংলাদেশ ত্যাগ করেন পি কে হালদার।
অবশেষে শনিবার (১৪ মে) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে অভিযান চালিয়ে পি কে হালদারসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।  তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া ভারতে তার বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি ও অর্থের সন্ধানও মিলেছে।  প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গে তার ২০ থেকে ২২টি অভিজাত বাড়ি থেকে জমির দলিলসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথি জব্দ করা হয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ