মে মাসে সড়কপথে নিহত ১০২৯, শিক্ষার্থী ৪৪৪

আবুল কাশেম, ঢাকা প্রতিনিধি >>>
২০২২ সালের ১ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৪ হাজার ৬৩১টি সড়কপথ দুর্ঘটনায় ১ হাজার ২৯ মৃত্যুবরণ করেছেন।  আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৯৪ জন।  নিহতদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সের ৭৭২ জন এবং ৪৪৪ জন শিক্ষার্থী।  ২৪১ জন নারী, শিশু ৯৭ এবং ৮১ জন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি রয়েছেন তাদের মধ্যে।  শিক্ষার্থী এবং তরুণদের অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে দ্রুত গতিতে মোটর সাইকেল চালানোর কারণে গতি হারিয়ে।  অন্যান্য বাহনগুলোতেও প্রায় একই সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে; অর্থাৎ নির্ধারিত গতির চেয়েও অনেক বেশি গতিতে চলার কারণে প্রাইভেটকার, বাস ও ট্রাক দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে।  এই সব বাহনের অধিকাংশ চালকের বয়সই ১৮ থেকে ৪০-এর মধ্যে।
বাংলাদেশের ২৬টি জাতীয় দৈনিক, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও ইলেকট্রনিক্স চ্যানেলে প্রকাশিত-প্রচারিত তথ্যর পাশাপাশি সারাদেশে সেভ দ্য রোড-এর স্বেচ্ছাসেবিদের তথ্যানুসারে, দ্রুত গতিতে মোটর সাইকেল চালানোর পাশাপাশি নিয়ম না মানা এবং হেলমেট ব্যবহারে অনীহার কারণে ১ হাজার ৩৬৭টি দুর্ঘটনায় আহত ৯৯৪ এবং নিহত হয়েছে ২৭৫ জন; অসাবধানতা ও ঘুমন্ত চোখে-ক্লান্তিসহ দ্রুত চালানোর কারণে ৮৩২টি ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬৩৭ এবং নিহত হয়েছেন ১২১ জন; খানা খন্দক, অচল রাস্তা-ঘাট আর সড়কপথ নৈরাজ্যের কারণে ১ হাজার ১১৬টি বাস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১ হাজার ১০৬ জন এবং নিহত হয়েছেন ৫২০ জন; পাড়া-মহল্লা-মহাসড়কে অসাবধানতার সাথে চলাচলের কারণে লড়ি-পিকআপ-নসিমন-করিমন-ব্যাটারি চালিত রিক্সা-সাইকেল ও সিএনজি অটোরিকশা দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ১১৬টি। এতে আহত হয়েছেন ৮৫৭ জন এবং ২২২ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়াও ১ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত নৌপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪৪টি।  আহত ৫২১ জন, নিহত হয়েছে ২৩ জন; রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ২১২টি।  আহত হয়েছে ২৮৬ জন, নিহত হয়েছে ২১ জন।  আকাশপথে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে ৫৬ জনকে।
সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, মহাসচিব শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, আইয়ুব রানাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৩১ মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে মে মাসের এই প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি আলোচ্য তা হলো, ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণদের বেপরোয়া বাহন চালনার কারণে নির্মম মৃত্যুর সংখ্যা অন্যান্য মাসগুলোর চেয়ে বেড়েছে মে মাসে।  সেই সাথে সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের পরিবহনগুলোও পথদুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে।  বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িতে কেবল ঢাকা নগরীতে আহত হয়েছেন ২৯ জন; এবং মৃত্যু বরণ করেছে মে মাসেই ২ জন।  ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এখনই বেপরোয়া বাহন চালানো থেকে চালকদেরকে নিবৃত করতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে।  পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সচেতনতা তৈরিতে সকলকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার প্রতিও গুরুত্ব দিয়েছেন সেভ দ্য রোড-এর গবেষণা সেল সদস্যগণ।

ডিসি/এসআইকে/এমএকে