সরকার চাইলে বসতে রাজি ইউপিডিএফ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপের জন্য ২৪ বছর পর সম্মতি জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
গণমাধ্যমে ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ থেকে নিরন চাকমার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলমান সংলাপ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মধ্যস্থতাকারীদের ওপর আস্থা রেখে ইউপিডিএফের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার চেঙ্গী ইউনিয়নের বড়কলক এলাকায় মধ্যস্থতাকারীদের কাছে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যৌক্তিকতা উল্লেখ করে দাবি পেশ করা হয়।  ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল ইসলামের হাতে দাবিগুলো তুলে দেন।
ওই সময় পানছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শান্তি জীবন চাকমা, ইউপিডিএফ খাগড়াছড়ি শাখার সংগঠক অংগ্য মারমা, মধ্যস্থতাকারীদের অন্যতম সদস্য মঞ্জু লাল দেওয়ানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা বলেন, ‘সত্তর-আশি দশকের পার্বত্য চট্টগ্রামের সঙ্গে আজকের পার্বত্য চট্টগ্রামের বিস্তর ফারাক। তারপরও কোনো কোনো মহলের দৃষ্টিভঙ্গি সেই আগের মতো রয়ে গেছে।  সত্তর-আশি দশকের চোখ দিয়ে বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামকে দেখতে চাইছেন ও মূল্যয়ন করছেন’।
ইউপিডিএফের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী এক সদস্য জানান, সরকারের সঙ্গে সংলাপে ঐক্যমত হয়ে ৮৭টি দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।  পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে অস্পষ্ট ও দুর্বল দিক গুরুত্ব দিয়ে এসব দাবি ও এর পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে।  এসবের মধ্যে ভূমি সমস্যা সমাধান, সমতল থেকে আসা বহিরাগতদের সম্মানজনক পুনর্বাসন, পাহাড়ে সংখ্যালঘুদের ওপর চাপিয়ে দেয়া উগ্রসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদ বাতিলসহ মৌলিক দিকগুলো দাবি হিসেবে চিহ্নিত ও উত্থাপন করা হয়েছে।  এসব দাবি মেনে সংলাপে রাজি হলে ইউপিডিএফ পরবর্তী পর্যায়ে এগিয়ে আসবে।
সরকারের সঙ্গে মধ্যস্থতার লক্ষ্যে এগিয়ে আসা নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘ইউপিডিএফের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে সংলাপের লক্ষে কিছু দাবি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।  আমি তা গ্রহণ করেছি।  সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে তা পৌঁছে দেব’।
দুই দশকের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পথ ছেড়ে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর ও অস্ত্র সমর্পন করে তৎকালীন শান্তি বাহিনীর গেরিলা সদস্যরা।  সরকারের সঙ্গে বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লামরা ওরফে সন্তু লারমা সই করা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বা শান্তি চুক্তির বিরোধিতা করে ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইউপিডিএফের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

ডিসি/এসআইকে/এমএএইচ