কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পতিতাদের ছিনতাই চক্র!

ফাইল ছবি

কক্সবাজার প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সন্ধ্যা নামার আগে দেখা মিলবে সংঘবদ্ধ কিছু নারী।  তাদের দেখে মনে হবে দল বেঁধে সাগরের তীরে বেড়াতে এসেছেন।  কিন্তু এটি প্রকৃত ঘটনা নয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নারীদের এ দলে থাকা সবাই ভাসমান পতিতা।  তবে তারা এখানে দেহ ব্যবসার জন্যও আসেননি।  তারা অপেক্ষা করছে এক অভিনব স্টাইলে ‘শিকার’ ধরার জন্য।  আর তাদের আশেপাশে ছদ্মবেশে অবস্থান করছে পেশাদার ছিনতাকারীরা।
এ পতিতারা ফুঁসলিয়ে কোনো খদ্দেরকে নিয়ে যাবে নির্জন স্থানে।  আর সেখানে ওঁৎ পেতে থাকবে ছিনতাইকারীরা।  তারপর তারা সবাই মিলে ঐ খদ্দেরের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেবে।  পতিতা ও ছিনতাইকারীদের সমন্বয়ে গড়ে উঠা এ সিন্ডিকেটটি বেশকিছু দিন ধরে সমুদ্র সৈকতে সক্রিয় রয়েছে।  তারা এভাবে জিম্মি করে বহু মানুষের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়েছে।  এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে রয়েছে কয়েকজন হিজড়াও। সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় তাদের শিকার ধরার মহড়া, যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে কিছুদিন ধরে এসব অপরাধী চক্রের দেখা মিলছে। সব মিলে অন্তত ১০টি সিন্ডিকেটের শতাধিক পতিতা, ছিনতাইতারী ও হিজড়া সৈকতে এ ফাঁদ বসিয়েছে বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
এসব প্রসঙ্গে সৈকতের ব্যবসায়ীরা জানান, এ সিন্ডিকেটটি সুকৌশলে সৈকতে বেড়াতে এসে এক শ্রেণির লোকজনদের ফুঁসলিয়ে জিম্মি করে সর্বস্ব হাতিয়ে নিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সন্ধ্যার পর পতিতারা সৈকতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যায়। তারপর পুরুষদের টাকার বিনিময়ে সঙ্গমের ফাঁদে ফেলে। কথা পাকা হলে নিয়ে যায় নির্জন স্থানে। সেখানে গেলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ছিনতাইকারী তাদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়।
ফাঁদ পেতে বসে থাকা কয়েকজন পতিতার সঙ্গে ছদ্মবেশে কথা বললে তারা প্রথমে নিজেদের পতিতা বলে স্বীকার না করলেও পরে স্বীকার করে।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে চলছে এ ছিনতাই সিন্ডিকেটের অপতৎরতা। বিষয়টি পুলিশের নজরে এসেছে কি-না জানতে যোগাযোগ করা হয় ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে। তারা জানায়, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ তাদের কাছে আসেনি। তবে বিষয়টি অবগত হয়ে সঙ্গে সঙ্গে অভিযানে নামে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পুলিশের অভিযান টের পেয়ে কয়েকজন হাতেনাতে ধরা পড়লেও সটকে পড়েন অনেকেই।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, সৈকতের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ কোনো অপরাধীকে ছাড় দিচ্ছে না। ছিনতাইকারীদের ধরতে প্রতিনিয়ত টহল জোরদার রাখা হয়েছে। চক্রের সদস্যসহ তাদের পেছনে কারা আছে তাদেরও ধরতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সৈকতে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।

ডিসি/এসআইকে/এফআরইউ