পাহাড় বিক্রেতা, কর্তনকারী ও অবৈধ বসবাস সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি

বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
জেলা প্রশাসনের একার পক্ষে অবৈধ বসবাসকারীদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের ডিসি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা প্রতি বছর উচ্ছেদ অভিযান চালাই। কিন্তু পাহাড়গুলো যাদের মালিকানাধীন, তারা যদি উচ্ছেদের পর নিজেদের দখলে না রাখে এবং অবৈধ বসবাসকারীদের সরিয়ে না দেয়, তাহলে জেলা প্রশাসনের একার পক্ষে কখনোই অবৈধ বসবাসকারীদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করা সম্ভব না। ফলে হতাহতের ঘটনা চলতেই থাকবে।
শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে নগরের আকবরশাহ এলাকায় পাহাড় ধসের স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ডিসি বলেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে হাজারো পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। প্রতি বছরই তাদের উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু উচ্ছেদ করার পরও শুকনো মৌসুমে তারা আবার এখানে ফিরে আসেন।
পাহাড় মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডিসি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ যারা রয়েছেন, তাদের যেন সরানোর ব্যবস্থা করা হয়। সরাতে যত ধরনের প্রশাসনিক সহযোগিতা লাগবে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে বলেও জানান তিনি।
মমিনুর রহমান বলেন, আগামি দু-তিনদিন ভারী বর্ষণ হবে। যারা ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছেন, তারা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসুন। আমাদের ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা আছে। যতদিন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকবেন সবাইকে ততদিন সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হবে।
তিনি বলেন, যারা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকবেন তাদের জন্য পাঁচ লাখ টাকা ও ১০ টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। যারা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে রয়েছেন তাদের স্থানান্তর করছি। এজন্য স্বেচ্ছাসেবী, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে কাজ করছেন। আমরা সবার সচেতনতা প্রত্যাশা করছি।
পাহাড়ধসের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে ও আহত ছয়জনকে ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ডিসি।
শনিবার ভোরগত রাত ১ টার দিকে আকবরশাহ থানার বরিশালঘোনা ও রাত ৩ টার দিকে ফয়’স লেকের বিজয় নগর এলাকায় পাহাড় ধসে চারজন নিহত হন। এছাড়া আহত হন আরো সাতজন।
এদিকে মানবাধিকার সংগঠকেরা বলছেন, সরকারি পাহাড় বিক্রি, সরকারি-বেসরকারি পাহাড় কেটে জনবসতি সৃষ্টিকারী নেপথ্যের কুশীলবদেরও আইনের আওতায় আনা উচিৎ। অনেক জনপ্রতিনিধিও এমন কাজে জড়িত। চিহ্নিত সেই ভূমিদুস্যতের দ্রুততার সাথে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

ডিসি/এসআইকে/সিসি