বাঁশখালীতে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ : পুলিশের ৩ মামলায় আসামি ১৩০০, মহিলাদল নেত্রীসহ গ্রেফতার ৭

আদালত প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিএনপি-পুলিশের মধ্যে শুক্রবারের সংঘর্ষের ঘটনায় ওই রাতেই পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের জ্ঞাত-অজ্ঞাত ১৩০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।  এতে বিস্ফোরক আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।  মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনার সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৬৩ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছিল।  মামলাগুলো অজ্ঞাতনামা আসামিও রাখা হয়েছে।
তিনটি মামলাতেই দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, তার ছেলে উপজেলা বিএনপির সদস্য মিসকাতুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পাসহ বিএনপির জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়েছে।  এর মধ্যে এ পর্যন্ত পুলিশ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে।  গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে দক্ষিণ জেলা মহিলা দলের সভাপতি জান্নাতুল নাঈম চৌধুরী রিকু, বাঁশখালী পৌরসভা মহিলা দলের আহ্বায়ক সরাবান তহুরা কলি, মো. পারভেজ, ইমরান, জোবায়ের, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুর রহিম ও মো. তারেক।
এদিকে মামলার পর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছে।  শনিবার (২৭ আগস্ট) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ সর্বত্র সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
বাঁশখালীতে সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিনটি মামলা হওয়ায় ঘটনাটি সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।  কেননা বিএনপি ক্ষমতা হারানোর পর থেকে বাঁশখালীতে থানা পোড়া, আদালত পোড়া, মন্দির ভাঙাসহ বেশ কয়েকটি ঘটনা হলেও কখনও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি।  গত শুক্রবার বাঁশখালীতে প্রথমবার এক সাথে ৩টি মামলা হয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, পুলিশের ওপর হামলাকারী বিএনপির দুস্কৃতিকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হবে।  বাঁশখালীতে বিএনপির দুই পক্ষের কোন্দল দীর্ঘদিনের, বিএনপির অর্ন্তকোন্দল ঠেকাতে পুলিশ নিরাপত্তা দিতে গেলে সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করেছে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ও বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পুলিশের সাথে বিএনপির কোন শত্রুতা নেই।  একটি চক্র পুলিশের ওপর ঢিল ছুড়ে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের ফাঁসিয়েছে।  শুনেছি আমি ও আমার ছেলের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।  কই আমি তো ঘটনার ৫০০ গজ দূরেও ছিলাম না।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, পুলিশের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে।  এ পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  বাঁশখালীর শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে কেউ অস্থিতিশীল পরিবেশ করে রক্ষা পাবে না।  দুস্কৃতিকারীদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
এর আগে শুক্রবার বিকালে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কর্মসূচির এক পর্যায়ে বিএনপি- পুলিশ সংঘর্ষ বাধে।  এ ঘটনায় এএসপি (সার্কেল), ওসি, তদন্ত ওসি, আরও ১১ পুলিশসহ ২৮ জন আহত হন।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ