৭ ডিবি পুলিশকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড

কক্সবাজার প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
কক্সবাজারের টেকনাফে ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাত সদস্যের প্রত্যেককে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর করে সাজার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইণের আদালত এ রায় দেন বলে জানান কক্সবাজারের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বহিষ্কৃত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান, আবুল কালাম আজাদ, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং কনস্টেবল মো. আল-আমিন ও মোস্তফা আজম।
এর আগে সকাল ৮ টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে আসামিদের কোর্ট হাজত আনা হয়।  পরে সাড়ে ১০ টায় সেখান থেকে আসামিদের আদালতে নেওয়া হয়।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০ টায় মামলার সাত আসামিকে আদালতে আনা হয়।  এরপর ১১ টায় বিচারক রায় পড়া শুরু করেন।  এতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক সাত ডিবি পুলিশকে ব্যবসায়ী অপহরণ ও ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় দন্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় প্রত্যেককে পাঁচ বছর করে কারাদন্ড ও ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং দন্ডবিধি ৩৮৬ ধারায় প্রত্যেককে ৭ বছর করে কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
প্রত্যেক আসামির ৭ বছর করে সাজা কার্যকর হবে। রায় ঘোষণার সময় সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।
মামলার নথির বরাত দিয়ে ফরিদুল বলেন, ‘গত ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার সদর থানার পেছনের রোড থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী একদল লোক টেকনাফের ব্যবসায়ী আব্দুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।  এরপর ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তার স্বজনদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা।  এক পর্যায়ে দেন-দরবারের পর ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় পরিবার।  পরে ওই টাকা পৌঁছে দেওয়া হলে পরদিন ভোররাতে আব্দুল গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়’।
পিপি ফরিদুল বলেন, ‘এরপর ব্যবসায়ী গফুরের স্বজনরা বিষয়টি টেকনাফের শামলাপুরে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা চৌকির দায়িত্বরত সদস্যদের অবহিত করেন।  মুক্তিপণ আদায়কারী ডিবি পুলিশের সদস্যরা মাইক্রোবাসযোগে মেরিন ড্রাইভ সড়কে নিরাপত্তা চৌকিতে পৌঁছালে সেনাসদস্যরা থামিয়ে তল্লাশি চালান।  এতে পুলিশ সদস্যদের হেফাজত থেকে ১৭ লাখ টাকা পান’।
ওই সময় এসআই মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও সেনাসদস্যরা বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
ফরিদুল বলেন, ‘এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর বাদি হয়ে টেকনাফ থানায় ডিবি পুলিশের সাত সদস্যকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।  ঘটনার প্রায় ১০ মাস পর ২০১৮ সালের আগস্টে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন’।

ডিসি/এসআইকে/এফআরইউ