পাহাড়তলীতে রেলের উচ্ছেদ অভিযানে ৩৬২ স্থাপনা উচ্ছেদ

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানাধীন স্ক্র্যাব কলোনিতে অভিযান চালিয়েছে রেলওয়ে। অভিযানে রেলের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা ৩৬২টি স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রায় এক একর জায়গাউদ্ধার করেছে রেলের বিভাগীয় ভূসম্পদ দপ্তর। তবে উচ্ছেদকৃত জায়গা উন্মুক্ত রেখে আসায় তা আবারো দখলের সুযোগ রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
রবিবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় আকবরশাহ, পাহাড়তলী ও খুলশী থানাধীন এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করে পাহাড়তলী রেলওয়ে বিভাগীয় ভূসম্পত্তি বিভাগ।
উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কর্ম ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবিদুর রহমান, রেলের বিভাগীয় ভূসম্পদ কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব উল করিম, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী মাজিস্ট্রেট জামশেদ হোসেন রানা, আকবরশাহ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালেহ, খুলশী পুলিশ বিট ফাঁড়ি ইনচার্জ খাজা এনাম এলাহি ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (সিআই) রেজওয়ানুর রহমান।
জানা গেছে, রেখের জায়গায় অবৈধভাবে দোকান ও স্থাপনা নির্মাণ করে লাখ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে লাগিয়ত ও ভাড়া আদায় করে আসছিল স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক চক্র। একই এলাকার খালপাড়ে গড়ে ওঠা পাহাড়তলী স্ক্র্যাব কলোনি ছিল মাদক ও অপরাধের আখড়া। ছিল পতিতা ব্যবসাও। রেলওয়ের জায়গা দখল করে বস্তিঘর নির্মাণ, দোকানপাট নির্মাণ করে প্রতি মাসে বিপুল অংকের টাকা আদায় করতো একাধিক চক্র। এখানে মাদকসেবন ও বিক্রি, ছিনতাই থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এলাকায় এসব অপকর্ম বন্ধের দাবিতে গত ১ জানুয়ারি মানববন্ধনও করে এলাকার লোকজন ও স্কুল শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয়রা জানান, এখনো খালপাড়ে রেলের জায়গায় অবৈধভাবে সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতারা নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ জায়গা দখল করে বস্তি/কলোনী নির্মাণ করে ব্যবসা করলেও সেগুলো উচ্ছেদ করা হচ্ছে না।
উচ্ছেদ হওয়া ব্যক্তিরা জানান, এখানে কতিপয় সাংবাদিক পরিচয়ে অনেকে চাঁদাবাজিতেও লিপ্ত। চাঁদা না পেয়ে অনলাইনে সংবাদ পরিবেশন করে, ফোন করে রেলের কর্তাদের বিরক্ত করে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এখানে এমনও সাংবাদিক আছে যে এক সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিল। মাদক বিক্রি, সেবনও করে। সে এখন বড় সাংবাদিক পরিচয় দেয়। বেতন না পেলেও প্রাইভেটকার চালায়। সে নিজেও এখানে রেলের জায়গা দখল করে ঘর ভাড়া নিচ্ছে। এখানে যত অপকর্ম হয় সবখান থেকে সেসহ সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা নেয় অনেকে। কেউ না দিলেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ ছাপায়।
রেলওয়ে কর্ম ব্যবস্থাপক (পূর্ব) আবিদুর রহমান জানান, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের পর সেখানে বনায়ন করা হবে। আর কেউ দখলের চেষ্টা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এরকম খবর আমাদের কাছেও আছে যে- সাংবাদিক পরিচয়ে রেলের জায়গায় গাড়ি পার্কিং করে চাঁদা নেয়, রেলের জায়গায় ঘর তুলে ভাড়া নিচ্ছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সেগুলোও উচ্ছেদ করবো।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর