কেএনএফ আতঙ্কে জঙ্গলে-আত্মীয়ের বাসায় অধিবাসীরা

বান্দরবান প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নিয়ে আতঙ্কে মারমা সম্প্রদায়ের অন্তত ৪০টি পরিবার গ্রাম ছেড়েছে। জঙ্গি ও সশস্ত্র সংগঠনবিরোধী যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে কেএনএফ আতঙ্ক ছড়ালে মুলপি পাড়া থেকে ওই পরিবারগুলোর সদস্যরা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বাড়ি ছাড়েন। কেউ রুমা বাজারের মারমা ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ভবন, কেউ আত্মীয়ের বাসায় আবার কেউ বা জঙ্গলে পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শনিবার সন্ধ্যায় পাহাড়ের প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে জীবন বাঁচানোর তাগিদে ছোট ছোট শিশুসন্তানসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে ১ নম্বর পাইন্দু ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মুলপি পাড়ার মারমা সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা পালাতে থাকেন বলে নিশ্চিত করেছেন পাইন্দু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা।
তিনি জানিয়েছেন, কেএনএফ আতঙ্কে যে যার মতো আশ্রয় নিয়েছেন। অধিকাংশই রুমা সদরে মারমা ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে ৪০ জন রয়েছেন। পরিস্থিত শান্ত না হওয়ার পর্যন্ত তারা রুমা সদরে অবস্থান করবেন বলে জানান এই জনপ্রতিনিধি।
স্থানীয়রা জানান, রুমা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে মুলপি পাড়া গ্রাম। ওই গ্রামে বম সম্প্রদায়ের ৮০টি ও মারমা সম্প্রদায়ের ৫১টি পরিবারের বসবাস। গ্রামটি দুর্গম এলাকায় হওয়ায় গ্রামের ভেতর দিয়ে কেএনএফ প্রতিনিয়ত চলাফেরা করতো। তারা জানান, কেএনএফের চলাচলের কারণে গ্রামবাসীর আতঙ্কিত হয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছে না এবং তাদের অত্যাচারে সবাই ভয়ে থাকে।
রুমার স্থানীয় সাংবাদিক শৈহ্লাচিং মারমা জানান, তারা বর্তমান পরিস্থিতির কারণে আতঙ্কে রুমা সদরে আশ্রয় নিয়েছেন।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, ওই গ্রামের একজনকে কেএনএফ ধরে নিয়ে যায় সম্প্রতি, তাকে মারধর করে আহত অবস্থায় জঙ্গলে ফেলে রাখা হয়। ওই ঘটনার পর গ্রামে লোকজনদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করে এবং গ্রাম থেকে বাইরে না যাওয়ার হুমকি দেয় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা।
শনিবার সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীরা অন্য স্থানে গেলে সেই সুযোগে পালাতে শুরু করে গ্রামবাসী। পালিয়ে আসা অনেক পরিবার এখনও জঙ্গলে রয়েছে। কোনো কোনো পরিবার তাদের নিকটআত্বীয়দের বাসায় আশ্রয় নিয়েছে।
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন শিবলী বলেন, আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর খবর নিয়েছি। কেউ কেউ নিজেদের আত্মীয়ের বাসায় আবার কেউ জঙ্গলে রয়েছে। তবে সোমবার আরও পরিবারের পালিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ