ঝুঁকিরোধে পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধ বসতিগুলোতে বিদ্যুৎ পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, বন্যার সময় দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দেয়ার নামে ঘরে ঢুকে ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। নগরীর উত্তর পাহাড়তলীসহ বিভিন্ন এলাকায় যারা পাহাড় কেটে রাস্তা ও ঘর-বাড়ি নির্মাণের অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। টানা বৃষ্টির সময় পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসরত প্রায় দেড় হাজার পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে এনে তাদেরকে খাবার দেয়া হয়েছে। জীবনের ঝুঁকিরোধে পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসরতদের সড়িয়ে যেতে মাইকিং করে সেখানকার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন জিরো টলারেন্স। অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে সরকারি জমি ও পাহাড় উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, সরকারি রাস্তা দখল করে যারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ রবিবার (১৩ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় নগরীর নি¤œাঞ্চল ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকার মূল সড়কসহ আশেপাশের সড়কগুলো ডুবে গিয়ে ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় কোনো কোনো গ্রামের ঘর-বাড়িতে হাঁটু ও কোমড় সমান পানি হয়েছে। বন্যার কারণে সাতকানিয়ার সাথে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন ছিল। ফলে এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন। এ দুর্দশা দেখে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানেরা তাৎক্ষণিকভাবে বন্যাাদুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে বলে কিছুটা হলেও কষ্ট লাঘব হয়েছে। কিন্তু বন্যার সময় দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দেয়ার নামে ঘরে ঢুকে ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে বিগত মাসের খাতওয়ারী অপরাধ চিত্র তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) তানভীর-আল-নাসীফ।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) কবীর আহম্মেদ, জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট এএইচএম সাইফুল্লাহ হাবিব, সিএমপি’র এডিসি পঙ্কজ চক্রবর্তী, জেলার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরওয়ার কামাল দুলু, সিনিয়র জেল সুপার মো. মঞ্জুর হোসেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান, উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল (রাউজান), সজন কুমার তালুকদার (রাঙ্গুনিয়া), রেজাউল করিম (বোয়ালখালী), তৌহিদুল হক চৌধুরী (আনোয়ারা), ফারুক চৌধুরী (কর্ণফুলী), চৌধুরী মো. গালিব (বাঁশখালী), উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মামুন (বোয়ালখালী), মাহফুজা জেরীন (মিরসরাই), শাহাদাত হোসেন (সীতাকু-), মো. আতিকুল মামুন (পটিয়া), আতাউল গণি ওসমানী (রাঙ্গুনিয়া), আবদুস সামাদ সিকদার (রাউজান), ইশতিয়াক ইমন (আনোয়ারা), মো. সাইদুজ্জামান (বাঁশখালী), এবিএম মশিউজ্জামান (হাটহাজারী), মো. মামুনুর রশিদ (কর্ণফুলী), হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবির খোন্দকার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাধবী বড়–য়া, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফরিদুল আলম, মিরসরাই পৌর মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ। সভায় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর