বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন নির্বাচনের আগে ভিন্নমত দমনের পূর্ণ প্রচেষ্টা : অ্যামনেস্টি

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন শক্ত হাতে ভিন্নমত দমনের পূর্ণ প্রচেষ্টা। সংগঠনটি সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছে, ভিন্নমত প্রকাশ কখনোই অপরাধ নয়। গতকাল সোমবার প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ করে বিএনপিসহ আরও কয়েকটি বিরোধী দল। সে সময় সমাবেশে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও দুজনের মৃত্যুতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আন্তর্জাতিক এই সংগঠনের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ক্যাম্পেইনার ইয়াসাসমিন কবিরতেœ এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
ইয়াসাসমিন কবিরতেœ বলেন, ‘বাংলাদেশে আগামি জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিক্ষোভকারীদের ওপর ঘনীভূত দমন-পীড়ন ভিন্নমত দমনের পূর্ণ প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের মনে রাখা উচিত যে, ভিন্নমত প্রকাশ কখনোই অপরাধ নয়’। এ সময় তিনি সরকারের প্রতি প্রত্যেকের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আহ্বান জানান।
অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচনের পরে হত্যাকাণ্ড, গ্রেফতার ও নিপীড়ন দেশটির মানবাধিকারের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। তাই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আবারও বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করে তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে দিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করবে’।
বিবৃতিতে ইয়াসাসমিন আরও বলেন, ‘যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে পুলিশকে সেগুলোর নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছভাবে সেগুলোর তদন্ত করতে হবে, যাতে যারা দায়ী তাদের বিচারের আওতায় আনা যায় এবং মৃত্যুদণ্ডাদেশ ছাড়া তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়। বিষয়টিই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখতে হবে’।
‘গণমাধ্যমের তথ্যানুসারে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কতিপয় ব্যক্তি সহিংসতাকে হাতিয়ার করেছিলেন। পুলিশকে অবশ্যই বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে এবং অল্প কয়েকজনের সহিংসতার কারণে অন্যদের অধিকার সীমিত করা থেকে বিরত থাকতে হবে’- বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘নির্বাচনের আগে এমন সহিংসতা উত্তেজনা উসকে দেবে। বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই এ ধরনের পরিস্থিতি প্রশমনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং সম্ভাব্য উত্তেজনা প্রশমনে সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন শক্তি প্রয়োগ করবে, তখন তারা অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলবে’।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ