মৃত্যুর প্রহর গুনছে প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গা

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা দাবি করেছে, দুটি নৌকায় চার শতাধিক রোহিঙ্গা খাদ্য ও পানি ছাড়া আন্দামান সাগরে ভাসছে। আজ মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক স্টেটক্র্যাফটের এক প্রতিবেদনে এই খবর জানা গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-এর ব্যাংককভিত্তিক আঞ্চলিক মুখপাত্র বাবর বালোচ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, আন্তর্জাতিক মহল উদ্ধার তৎপরতা না চালালে সাগরে ভাসমান ওই রোহিঙ্গারা নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে পতিত হবে।
বার্তা সংস্থা এপিকে বালোচ বলেন, কোনো উদ্ধারের পদক্ষেপ না নিলে নারী ও শিশুসহ ৪০০ মানুষ নিজ চোখে মৃত্যুকে দেখতে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যদি নৌকা দুটিকে কোনো সহযোগিতা না করা হয়, তবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নৌকাসহ ১৮০ জন নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, আবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
ধারণা করা হচ্ছে, রোহিঙ্গাবোঝাই ওই নৌকা দুটি দুই সপ্তাহ আগেই বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল।
দুটি নৌকার একটির কাপ্তানের সঙ্গে গত শনিবার যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছিল এপি। ওই কাপ্তান জানিয়েছিলেন, তাঁর নৌকাটিতে ১৮০ থেকে ১৯০ জন আরোহী আছে। কিন্তু তাঁদের কাছে কোনো খাবার এবং পানি অবশিষ্ট নেই। এর মধ্যে আবার ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে গেছে। মান নকিম নামের ওই কাপ্তান দাবি করেছেন, কোনো সাহায্য না পেলে নৌকায় থাকা সবাই মারা যাবে।
পরদিন গত রবিবার নকিম জানিয়েছিলেন, তাঁর নৌকাটি থাইল্যান্ডের পশ্চিম উপকূল থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। গত সোমবার থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে বাহিনীটির মুখপাত্র জানান, ওই নৌকাটির বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
ইউএনএইচসিআর-এর আঞ্চলিক মুখপাত্র বাবর বালোচ জানিয়েছেন, অন্য নৌকাটিও ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আচেহ প্রদেশের উপকূল থেকে প্রায় সমান দূরত্বে অবস্থান করছে। ১৩৯ জন মানুষসহ নৌকাটি গত শনিবার সুমাত্রার অগ্রভাগে সাবাং দ্বীপে পৌঁছেছে। আরোহীদের মধ্যে ৫৮ শিশু, ৪৫ নারী এবং ৩৬ জন পুরুষ রয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ক্যাম্পগুলোতে খাদ্য রেশন বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বিভিন্ন গ্যাংয়ের অত্যাচারে গত বছর থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে।
রাষ্ট্রীয় মদদে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছে।

ডিসি/এসআইকে/এফআরইউ