মিয়ানমারের আরও ২৪ সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে

বান্দরবান প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ২৪ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তারা তমব্রু ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। আরও ৩০ বিজিপি সদস্য বাংলাদেশের প্রবেশের অপেক্ষা রয়েছে বলে জানা গেছে। পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যদের অস্ত্র ও গুলি বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) হেফাজতে রয়েছে।
এর আগে রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে মিয়ানমারের বিজিপির ১৪ জন সদস্য পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি চলছে। উভয়ের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বেসামরিক তিনজন লোক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি গোলা বাইশফাঁড়ী সীমান্তে এসে পড়েছে। এতে একটি বাড়িতে আগুন ধরে যায়।
ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমার সীমান্তে থেমে থেমে গোলগুলির ঘটনা ঘটছে। শনিবার রাত তিনটার দিকে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করে। গোলাগুলির কারণে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী বাইশফাঁড়ি, কোনারপাড়া, ভাজাবনিয়া ও তমব্রুর বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে যে যার মতো করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। প্রায় তিন হাজারের মতো মানুষ ঘর ছেড়েছেন। আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন স্থানীয়রা।
গোলাগুলিতে রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বিজিপি’র ১৪ জন সদস্য বাংলাদেশের আশ্রয় নেয়। এরপর দুপুরের দিকে আরও ২৪ জন বিজিপি সদস্যসহ মোট ৩৮ জন বিজিপি সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পালিয়ে আসা সৈন্যদের কাছে থাকা অস্ত্র ও গুলি বিজিবির হেফাজতে রয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. আনোয়ার বলেন, ‘শুনেছি তাঁরা রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরের দিকে রাইট ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে বিজিবি তমব্রু ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। বিকেল ৫টার দিকে মিয়ানমারের আরও ৩০ জন বিজিপি সদস্য তমব্রু সীমান্তে আশ্রয়ের জন্য উপস্থিত হয়েছেন’।
নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে আসা একটি গোলা বাইশফাঁড়ি এলাকার নুরুল কবীরের বাড়িতে পড়েছে। এতে মুহূর্তের মধ্যে বাড়িতে আগুন ধরে যায়। তবে এতে বাড়ির কেউ হতাহত হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিভিয়ে ফেলেছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা জানান, মিয়ানমারে সীমান্তে দুই বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় বিদ্যালয়গুলো আগে থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, মিয়ানমার সীমানার অভ্যন্তরে গোলাগুলি চলছে। ফলে আতঙ্কে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সীমান্তে পরিস্থিতি অবনতি ঘটলে স্থানীয় বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হয়েছে। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার কথা শুনেছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি, পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে’।

ডিসি/এসআইকে/এসপিআর