উত্তর কাট্টলীতে গ্যাস বিস্ফোরণ, কারণ খুঁজতে ৫ সদস্যের কমিটি

উত্তর কাট্টলীতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন।

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানাধীন উত্তর কাট্টলী এলাকায় গ্যাস লাইন থেকে গ্যাস লিক হয়ে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।  তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।  ৭ দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।  তিনি আরো বলেন, এ অগ্নিকাণ্ডের পেছনে কারও দায় থাকলে- তদন্তে সেটা উঠে আসবে।  তদন্তে কারও গাফেলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম ছাড়া কমিটির অন্য ৪ সদস্য হলেন- বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কেনোয়ার হোসাইন, সিএমপির সহকারী পুলিশ সুপার মো. আরিফ হোসেন. সিডিএ’র অথরাইজড অফিসার মো. ইলিয়াছ এবং ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আলী আকবর।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম জানান, মরিয়ম ভবনে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান এবং ক্ষয়-ক্ষতি নির্ধারণে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক স্যার ৫ সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন।  আগামি ৭ দিনের মধ্যে আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল রবিবার (৮ নভেম্বর) রাতে উত্তর কাট্টলীর মুরাদ চৌধুরী বাড়িতে অবস্থিত মরিয়ম ভবনে গ্যাস লাইনের লিকেজ তেকে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৭ জনসহ মোট ৯ জন দগ্ধ হন।  স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করান।
অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধরা হলেন- মিজানুর রহমান (৪২), সাইফুল ইসলাম (২৫), বিবি সুলতানা (৩৬), মানহা (২), মাহের (৮), পেয়ারা বেগম (৬৫), রিয়াজ (২২), সালমা জাহান (২১) এবং সুমাইয়া (১৮)।  এরমধ্যে ৬৫ বছর বয়সী পেয়ারা বেগম সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য মিজানুর রহমান (৪২), সাইফুল ইসলাম (২৫), বিবি সুলতানা (৩৬), মানহা (২), মাহের (৮) এবং সুমাইয়াকে (১৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ জানান, অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৯ জনের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  এরমধ্যে দগ্ধ পেয়ারা বেগমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে পাঠানো হয়।  সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।  ৬ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।  বাকি দুইজনকে আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি।
অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ব্যক্তিদের খোঁজ নিতে সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন।  তিনি হাসপাতালে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন।  দগ্ধ ব্যক্তিদের শারিরীক অবস্থার খবর নেন।  জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দগ্ধদের সবধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এরপর জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল উত্তর কাট্টলী এলাকার মুরাদ চৌধুরী বাড়ির মরিয়ম ভবনে যান।  সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।  অগ্নিকাণ্ডের কারণ খুঁজে বের করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান।
এ সময় তার সঙ্গে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম, কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম, জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার রাজিব হোসেনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ডিসি/এসআইকে/আরআর