সড়ক দুর্ঘটনায় ডিসেম্বরে ৪৬৪ জনের মৃত্যু

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে দেশে ৪০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৪ জন নিহত ও ৫১৩ জন আহত হয়েছে।  এই সময়ে পাঁচটি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৭ জন ও ১২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছে।
রবিবার (৩ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।  সংগঠনটি সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজপোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে ৭৬ জন নারী ও ৫১ জন শিশু রয়েছে।  এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।  ১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয় ১৪৭ জন, যা মোট নিহতের ৩১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।  মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৪ দশমিক ৩২ শতাংশ।  দুর্ঘটনায় ১২৮ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ।  পাশাপাশি যানবাহন চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৪ জন, যার মোট দুর্ঘটনার ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় ১৮ জন বাসযাত্রী, ১৩ জন ট্রাকযাত্রী, ১১ জন পিকআপের যাত্রী, সাত জন লরিযাত্রী, পাঁচ জন ট্রাক্টরের যাত্রী, ৯ জন মাইক্রোবাসের যাত্রী, সাত জন প্রাইভেটকারের যাত্রী, ১২ জন সিএনজি চালিত অটোরিকশার যাত্রী, ৬০ জন ইজিবাইক-অটোরিকশার যাত্রী, ২৭ জন নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-বোরাক-টেম্পুর যাত্রী, ছয় জন টমটম-ভ্যান, পাঁচ জন বাইসাইকেল আরোহী ও ৯ জন রিকশা-রিকশাভ্যান যাত্রী নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১২৪টি (৩০ দশমিক ৮৪ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১২৯টি (৩২ দশমিক ০৮ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ১০৪টি (২৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৪২টি (১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে (ফেরিঘাট, নদীর তীর) তিনটি (০ দশমিক ৭৪ শতাংশ) সংঘটিত হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা এবং না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি অন্যতম।
সুপারিশ
দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ-এর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ