সৈকতে ২ যুবকের মরদেহ উদ্ধার, হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা পরিবারের

রাফিদ ঐশিক ও মেহের ফারাবি অভ্র

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতে যশোরের দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধারের খবরে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। সন্তানের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকে বিহ্বল তাদের বাবা-মা। স্বজনদের মনে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। এই মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলেও ধারণা করছেন তারা। দাবি উঠেছে, সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার।
মৃতরা হলেন- যশোর উপশহরের এ ব্লকের বাসিন্দা কবি কাসেদুজ্জামান সেলিমের ছেলে রাফিদ ঐশিক (২৩) ও শহরের লালদিঘি এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক শাহরিয়ার মেহের ইবনে মিজানের ছেলে মেহের ফারাবি অভ্র (২৩)। রাফিদ ঐশিক যশোর ক্যান্টমেন্ট কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও অভ্র ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। শুক্র ও শনিবার পৃথক দিনে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সি-গাল ও নাজিরারটেক পয়েন্ট থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃতদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, দুই যুবককে হারিয়ে পরিবারের সদস্যরা শোকে কাতর। সন্তানদের হারিয়ে কোনোভাবেই সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছেন না তাদের বাবা-মা। সমবেদনা জানাতে শোকসন্তপ্ত পরিবারের বাড়িতে ভিড় করছেন আত্মীয়-স্বজনসহ শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
মৃত রাফিদ ঐশিকের বাবা কবি কাসেদুজ্জামান সেলিম বলেন, ১৪ সেপ্টেম্বর সাত বন্ধু একসঙ্গে কক্সবাজার বেড়াতে যায়। কিন্তু শুক্রবার দুপুর থেকে তাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না। শনিবার দুপুরে জানতে পারি শুক্রবার দুপুর ও বিকেলে সৈকতের সি-গাল পয়েন্টে দুই যুবকের মরদেহ ভেসে আসে। তাদের একজন স্থানীয় আর অন্যজন রাফিদ ঐশিক। শনিবার ভেসে আসে ঐশিকের বন্ধু অভ্রর মরদেহ।
তিনি আরও বলেন, তারা কখন কীভাবে সৈকতে গোসল করতে নেমেছিলেন এবং দুই বন্ধু নিখোঁজ হওয়ার তথ্য প্রশাসন ও পরিবারকে বাকি পাঁচ বন্ধু কেন জানায়নি তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। আমি ধারণা করছি, আমার সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে। এ ঘটনার সঠিক তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
মৃত মেহের ফারাবী অভ্রর ছোট ভাই আবির হোসেন বলেন, বড় ভাইয়ের সঙ্গে সর্বশেষ শুক্রবার সকালে আম্মুর সঙ্গে কথা হয়েছে। এরপর থেকে আর কথা বলা সম্ভব হয়নি। আমরা কক্সবাজার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি দ্রুত তাদের মরদেহ আনার জন্য।
এদিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনিরুল গিয়াস সাংবাদিকদের জানান, যেহেতু দুজনের মরদেহ মিলেছে, তারা কীভাবে সমুদ্রে গেছেন বা আগে কী ঘটেছিল, অধিকতর তদন্তের স্বার্থে মৃত দুজনের সঙ্গে থাকা চার বন্ধুকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা কক্সবাজার আসছেন। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ