আগুনে শেষ ৪৬ দোকানির পুঁজি-স্বপ্ন

ফাইল ছবি

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
সকালকে উপলক্ষ করে বাজারে বাড়তে থাকে মানুষের আনাগোনা। ব্যবসায়ীরা মাত্র দোকান খুলেছেন। কেউ আবার বাইরে পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন। কেনাবেচার হাকডাক শুরু। হঠাৎ দাউদাউ করে জ্বলে উঠে আগুনের লেলিহান শিখা। আর এমন আগুনেই পথে বসেছেন অন্তত ৪৬ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ভালো আয়ের আশায় থাকা ৪৬ দোকানির পুুঁজি ও স্বপ্ন যেন মূহুর্তেই আগুনে পুড়ে গেছে। হালিশহর গোডাউন বাজারের একটি বিপণিকেন্দ্রে আগুন লাগার এ ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় রিদুয়ান আহমেদ বলেন, ‘এ বাজারটিতে সকালে মানুষের আনাগোনা বাড়ে। দৈনন্দিন বাজার করতেই মানুষ সেখানে যায়। যে কারণে সকাল সকাল ব্যবসায়ীরা দোকান খোলেন। বাইরে মালামাল রেখে ব্যবসা করেন। আগুন লাগার কারণে কেউ এসব পণ্য সরাতে পারেনি। আবার দোকানের ভেতরে থাকা বহু পণ্য পুড়ে গেছে। জীবন বাঁচাতে গিয়ে অনেকেই পণ্য ফেলে বাইরে বেড়িয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। আগুন লাগার এই ঘটনায় দোকানদাররা পথে বসেছেন। অনেকেই পুঁজি হারিয়েছেন’।
ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ ও বন্দর স্টেশনের ৯টি গাড়ি আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিউটন দাশ জানান, সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। আগ্রাবাদ স্টেশনের ৭টি ও বন্দর স্টেশনের ২টি গাড়ি আগুন নেভানোর কাজ করেছে। আগুনে একটি বিপণিকেন্দ্রের সেমিপাকা ৪৬টি দোকানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত ও হিসাব করে জানাতে পারবো।
ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডে ২২টি কাপড়ের, ১০টি সবজির, ৮টি মুদির, ২টি জুতার, ২টি প্রসাধনীর, ১টি কুলিং কর্নার, ১টি চায়ের দোকান পুড়ে গেছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কেউ কেউ দোকানের আংশিক পণ্যসামগ্রী সরাতে পারলেও অনেকে কিছুই বের করতে পারেননি। অনেক দূর থেকে ধোঁয়ার কুন্ডলী দেখা যাওয়ায় আশপাশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ব্যবসায়ীরা দোকানের সামনে এসে কাঁদতে থাকেন। পুুঁজি ও স্বপ্ন হারানো অনেক ব্যবসায়ী বিলাপ করে কাঁদেন। শামসুদ্দিন নামে মুদি দোকানের এক কর্মচারী বলেন, সকালে দোকান খুলেছিলাম মাত্র। ব্যবসা শুরু হতেই আগুন লেগেছে বলে চিৎকার শুনতে পাই। তাৎক্ষণিক দোকান থেকে বের হয়ে এসে দেখতে পাই আগুনে সব পুড়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রাসহ এগিয়ে আসলে দোকানের কিছু পণ্য সরাতে পারি। বেশিরভাগই পুড়ে গেছে।

ডিসি/এসআইকে/আরসি