দুর্ঘটনা এড়াতে বান্দরবানে বসছে সাইনবোর্ড

বান্দরবান প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পর্যটন স্পট, সারিবেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা নয়নাভিরাম পাহাড় ও ভেসে চলা মেঘের ভেলায় সমৃদ্ধ বান্দরবান।  এসবের সঙ্গে ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আদি বৈচিত্র্যময় জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি আকর্ষণ করে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের।  ফলে সারা বছর পর্যটকদের আনাগোনা থাকে ‘পাহাড়ি কন্যা’ খ্যাত বান্দরবানে।
তবে ভ্রমণপিপাসুদের অতি উৎসাহ ও বিপদজনক জায়গা সম্পর্কে ধারণা না থাকায় ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা।  ফলে অনেক সময় ঘটে প্রাণহানিও। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে বান্দরবানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পর্যটকদের জন্য বিপদজনক জায়গায় বসানো হচ্ছে নিরাপত্তা সাইনবোর্ড।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের মেঘলা ও নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কায়েসুর রহমান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা বইমেলার প্রেস ব্রিফিং চলাকালে সাংবাদিকদের থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পর্যটন স্পট সম্পর্কে জানতে পারে জেলা প্রশাসন। বিষয়টি খুবই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বান্দরবানের সব উপজেলার বিপদজনক জায়গাগুলো চিহ্নিত করে। পরে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নিরাপত্তা সাইন বসানোর নির্দেশনা দেন।
কায়েসুর রহমান আরও বলেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা আফরিন মুস্তাফা থানাকুম, শৈলপ্রপাত, উজানীপাড়া, মধ্যমপাড়াসহ উপজেলা ও পৌর এলাকার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তা সাইনবোর্ড বসিয়েছেন। একইভাবে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, থানচি, রুমা, আলীকদম উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোতেও এ ধরনের নিরাপত্তা সাইনবোর্ড বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এর আগে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে বান্দরবানের দুটি জনপ্রিয় পর্যটন স্পট নীলাচল ও মেঘলায়ের প্রবেশমুখ এবং অভ্যন্তরে দায়িত্বপালনকারী স্টাফদের সুনির্দিষ্ট পোশাক দেওয়া হয়েছে। যাতে পর্যটকরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে বিশেষ পোশাক পরিহিত এসব লোকের কাছে সহজেই সাহায্য চাইতে পারে। নীলাচল ও মেঘলা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতাভুক্ত দুটি পর্যটন এলাকা। এখানে পর্যটকদের সঙ্গে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে ফুটেজ দেখে তা শনাক্ত করার ব্যবস্থা রেখেছে জেলা প্রশাসন। বাকি জায়গাগুলোও সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করা হবে বলে জেলা প্রশাসক আশ্বাস দিয়েছেন।
কায়েসুর রহমান বলেন, মেঘলা ও প্রান্তিক লেকে সোলার বোট, প্যাডেল বোট এবং কায়াকিং বোটে চড়ার সময় পর্যটকরা যেন সতর্কতা অবলম্বন করে, তার জন্য সেখানে সতর্কতা ও নির্দেশনাবলী ব্যানার বসানো হয়েছে।
২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থেকে ১০ জনের একটি পর্যটক দল বান্দরবান ভ্রমণে আসে। এদের মধ্যে ২৫ ডিসেম্বর বাদুরের ঝর্ণা এলাকার সাঙ্গু নদীতে গোসলে নেমে মারিয়া ইসলাম (১৯), মো. আহনাফ আকিব (২২) ও আদনীন (১৭) নামে তিনজনকে লাশ হয়ে ফিরতে হয়েছিল।

ডিসি/এসআইকে/এসপিআর