আহত-নিহতদের পাশে থাকবো আমরা : মুজিবুর রহমান

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।  এ ঘটনায় আহত হয়েছেন চার শতাধিক।  দীর্ঘ ২০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।  এ অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডে হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছে উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো।  ডিপোর মালিকপক্ষও জানেয়েছে এমন ক্ষতির আশঙ্কা।  তবে পরিস্থিতি যাই হোক এই ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন তাদের সকল দায়-দায়িত্ব ডিপো কর্তৃপক্ষ বহন করবে।  যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের দায়িত্বও বহন করবে বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিকপক্ষ।
রবিবার (৫ জুন) বিকালে বিএম কনটেইনার ডিপোর পরিচালক মজিবুর রহমান বলেন, ‘ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে আমার ক্ষতি হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।  আমার সব শেষ। তবে আমি আহত ও নিহতদের পরিবারের পাশে আছি’।
বিএম কনটেইনার ডিপো চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন।  মজিবুর রহমান স্মার্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিএম কনটেইনার ডিপোর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।  তিনি চট্টগ্রাম জেলা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এবং দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার সম্পাদক।
অবশ্য কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে রবিবার বিকাল পর্যন্ত ডিপোর মালিক বা কোনো কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যাননি।  মালিকপক্ষের কেউ না থাকায় কনটেইনার ডিপোতে কী ধরনের কেমিক্যাল ছিল, তা জানতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
মজিবুর রহমান বলেন, ‘কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারিনি।  তবে কনটেইনার থেকেই আগুন ধরেছে বলে ধারণা করছি।  নৈতিকতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হতাহতদের পাশে থাকবো।  আহতরা যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা পায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।  চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার আমরা বহন করবো।  দুর্ঘটনায় যারাই হতাহত হয়েছে তাদের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।  পাশাপাশি হতাহতদের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া হবে।  প্রশাসন যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে সেভাবে সহায়তা করা হবে’।
‘ডিপোতে শতাধিক শ্রমিক ও কর্মকর্তা ছিলেন’ উল্লেখ করে মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো তথ্য গোপন করিনি।  ডিপোতে শতাধিক শ্রমিক ও কর্মকর্তা ছিলেন।  হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল ডিপোতে।  হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড অতিরিক্ত হিটে আগুন ধরে বিস্ফোরিত হয়েছে।  রাসায়নিক পদার্থ ও গার্মেন্টস পণ্য থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।  এজন্য হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে।  সেই সঙ্গে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি’।
তবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেছিলেন, ‘আমরা ডিপোর মালিকপক্ষের লোকজনকে খুঁজছি।  দুর্ঘটনার পর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।  এজন্য উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।  তাদের খোঁজ পেলে জানা যেতো, কোন কনটেইনারে কী ধরনের দ্রব্য এবং কতটা কনটেইনার বিপজ্জনক।  কারণ আগুনের সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।  এতে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে’।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।  রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।  দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি চার শতাধিক।  তাদের মধ্যে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীও রয়েছেন।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিউটন দাশ বলেন, ‌‘ফায়ার সার্ভিসের সব ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।  এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।  তবে তীব্রতা কিছুটা কমেছে’।

ডিসি/এসআইকে/এএ