মৃত্যুর পর বিশা পাগলার গোপন কক্ষে মিললো আড়াই কোটি টাকা

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
কুমিল্লার তিতাসে বিশা পাগলা নামের এক মৃত ব্যক্তির ঘরের গোপন কক্ষ থেকে নগদ ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ছয় ভরি স্বর্ণ ও ১ হাজার ১০০ দিরহাম বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে।  মৃত ওই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আমির হোসেন।  তিনি স্থানীয়ভাবে বিশা পাগলা নামে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন।  বিশা পাগলা তিতাস উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের বড় গাজীপুর গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে।  আমির হোসেন ওরফে বিশা পাগলার স্ত্রী-সন্তান নেই।  তিনি এক ভাগ্নিকে দত্তক নিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) তার গোপন কক্ষ থেকে এসব স্বর্ণালংকার ও টাকা-পয়সা উদ্ধার করে তার দত্তক মেয়ে তাছলিমা আক্তার ও স্থানীয়রা।  পরে টাকা দেখেই পুলিশকে খবর দেন তারা।  পুলিশ এসে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সারা রাত সেই বাড়ি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাখে।  পরে বুধবার (১৩ জুলাই) দুপুরে তার পাঁচ ওয়ারিশের হাতে এই টাকা তুলে দেয় পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৪০ বছর ধরে বিশা পাগলা নিজ গ্রামের গাজীপুর মাজার শরিফের পাশে একটি বাড়িতে থাকতেন এবং মাজারের খাদেম হিসেবে কাজ করতেন।  গত শুক্রবার (৮ জুলাই) বার্ধক্যজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়।  মৃত্যুর পরে তার গোপন কক্ষে থাকা আলমারি ও ওয়ারড্রোব খুলে দেখা যায় টাকার পাহাড়।  আলমারিতে থাকা বান্ডেলে বেশি আছে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট।  প্রত্যেক বান্ডিলেই টাকার পরিমাণ ছিল এক লাখ টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দা আফরোজা বলেন, অসুস্থ হলেও তিনি কখনও ডাক্তারের কাছে যেতেন না।  নিজে কিছু কিনেও খেতেন না।  কোথাও গাড়িতে চড়ে যেতেন না।  এভাবেই তিনি টাকাগুলো সংরক্ষণ করেছেন।  মাজারে আসা ভক্তরা তাকে স্বর্ণালংকার, বিদেশি মুদ্রা ও নগদ টাকা দিয়ে যেতেন।
টাকা গোনার সময় উপস্থিত ছিলেন তিতাসের স্থানীয় সাংবাদিক মহসিন হাবিব।  তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে টাকা গুনে তার ওয়ারিশদের পাঁচ জনের যৌথ ব্র্যাক ব্যাংকের একটি নতুন অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে।
তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, মৃত আমির হোসেন গাজীপুর মাজারের পাশে থাকতেন।  উনার এই টাকা মূলত মাজারে ঘুরতে আসা ভক্তদের দান।  তার ঘরে তিনি জীবিত অবস্থায় কাউকে ঢুকতে দেননি।  তাই কেউ এ বিষয়ে জানতেন না।  মারা যাওয়ার পর উনার ওয়ারিশরা এই টাকা দেখে আমাদের জানান।  পরে পুলিশ পাঠিয়ে টাকাগুলো গুনে ব্র্যাক ব্যাংকে তার পাঁচ আত্মীয়ের নামে খোলা একটি নতুন অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এটিএম মোর্শেদ বলেন, আমরা এর আইনি দিকগুলো দেখছি।  যাচাই-বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ