নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
নগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ কে এম বেলায়েত হোসেনের বাসায় কাজ করতে গিয়ে গ্যাসের আগুনে ঝলসে গেছেন গৃহকর্মী রেনু বেগম (৩৫)। গত ১৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) এই ঘটনা ঘটলেও সংবাদমাধ্যমে যাতে এই খবর না আসে তার জন্য গুরুতরভাবে ঝলসে যাওয়া রেনুর পরিবারকে দেয়া হয় হুমকি- এমনই অভিযোগ রেনুর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের। অনেকটাই গোপনে রেনুকে ভর্তি করানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আজ রবিবার (২১ আগস্ট) একাধিক সূত্রে খবর পেয়ে এ প্রতিবেদক ঘটনার সত্যতা পায়।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতই রেনু বেগম (৩৫) সকাল ৬ টায় কাজ করতে যান নগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ কেএম বেলায়েত হোসেনের বাসািয়। কিন্তু আগের দিন গ্যাসের লাইন যথাযথভাবে বন্ধ না করায় রাতভর রান্নাঘরে জমে যায় গ্যাস। সকালে রেনু চা বানানোর উদ্দেশ্যে রান্নার চুলা জ্বালাতে গেলে পুরো রান্নাঘরে আগুন ধরে যায়। সেই আগুনে রেনু বেগমের ৭০ শতাংশ দেহ ঝলসে যায়। বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে রেনু। তার ৩টি ছোট ছোট সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে।
রেনু বেগম হালিশহর এলাকার বি ব্লকের ৩ নম্বর সড়কের ২ নম্বর লেইনের ২৭ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হুরে আরা বেগম বিউটির মাধ্যমে তিনি বেলায়েত হোসেন এর বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজটি নিয়েছিলেন। হুরে আরা বেগম বিউটি এ কে এম বেলায়েত হোসেনের মেয়ে।
হাসপাতালে উপস্থিত রেনু বেগমের এক প্রতিবেশী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ৩ সন্তানের ভরণপোষণের জন্য বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করছেন রেনু। মহিলা কমিশনার বিউটি আপার মাধ্যমে রেনু কমিশনারের বাবার বাসায় কাজ করতে যান। আগের দিন উনাদের বাসার গ্যাসের চুলা ঠিকমতো বন্ধ না করায় রাতভর গ্যাস জমে পুরো পাকঘরে। পরেরদিন সকালে চুলা জ্বালাতে গিয়ে রেনু গ্যাসের আগুনে পুড়ে যায়। তিনি বলেন, আমি রেনুর সাথে কথা বলেছি, তার ভাইয়ের সাথেও আমাদের কথা হইছে। তারা বলেছে, এই ঘটনার কথা যেনো কোনো মিডিয়াকে না জানায়। কাউকে ডেনো ছবি তুলতে না দেয়। যদি কাউকে কিছু বলে তাহলে চট্টগ্রাম থেকে বের করে দিবে বলে রেনুর ছোট ভাইকে হুমকি দেয়।
রেনু বর্তমানে চমেক হাসপাতালের ৬ তলায় স্থাপিত বার্ণ ইউনিটের ৩৬ নম্বর ওয়ার্পের ৩২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সরা জানিয়েছেন, গ্যাসের আগুনে রেনুর দেহের ৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় শঙ্কামুক্ত নন।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে একেএম বেলায়েত হোসেনের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও সেটির সংযোগ বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ডিসি/এসআইকে/আরসি