ফটিকছড়িতে এক প্রসূতির ৬ নবজাতকের জন্ম, দেড় ঘন্টার মধ্যেই সবার মৃত্যু

উত্তর চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এক সঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম হয়েছে। তবে অপরিপক্ক হওয়ায় নবজাতকগুলো জন্মের দেড় ঘন্টার মধ্যেই মারা যায়। উপজেলার নাজিরহাটে সেবা ক্লিনিক ও নার্সিং হোমে সোমবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেসরকারি ওই ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. দিদারুল আলম। তিনি জানান, তাসলিমা নামের প্রসূতি ক্লিনিকের চিকিৎসক উম্মে ফাতেমা তুজ জোহরার কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। সোমবার দুপুরে প্রায় ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাসলিমা অসুস্থ বোধ করায় ক্লিনিকে আসেন। চিকিৎসক ফাতেমা তুজ জোহরা তাকে পরীক্ষা করে ডেলিভারি হবে বলে জানান। ক্লিনিকেই সন্ধ্যা ৬ টার দিকে তাসলিমা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় একে একে ছয় সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের ১৫ মিনিট থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যেই সন্তানরা মারা যায়।
দিদারুল বলেন, ‘মায়ের গর্ভে থাকার বয়স পূর্ণ না হওয়ায় সবগুলো সন্তানই অপরিপক্ক ছিল। যেখানে একজন স্বাভাবিক নবজাতকের ওজন আড়াই কেজির উপরে হয়, সেখানে তার প্রতিটি বাচ্চার ওজন ছিল ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রামের মধ্যে। নরমাল ডেলিভারিতে জন্ম নেয়া সবগুলো নবজাতকই জীবিত ছিল। তবে ১৫ মিনিট পর থেকেই তাদের মৃত্যু ঘটে। অবশ্য এ ধরনের বাস্তবতার জন্য রোগীর পরিবারকে আগেই জানানো হয়েছিল। কারণ বাবুগুলো ৬ মাসেরও কম সময় মায়ের গর্ভে ছিল, তাই স্বাভাবিকভাবেই অপরিপক্ক হওয়ার কথা। ৭ মাস হলেও জীবিত রাখা সম্ভব হতো হয়তো’।
চিকিৎসক উম্মে ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ‘উনি সন্তানসম্ভবা হওয়ার সাড়ে ৩ মাস পর আমার কাছে প্রথম আসেন। তখন আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে ওনার গর্ভে ৬টা বেবি থাকার বিষয়টি জানতে পারি, ওনাকে জানাই। তখন তো আর কিছু করার ছিল না। গর্ভপাত করাটা তো অনৈতিক। তাছাড়া বাচ্চার নিরাপত্তার জন্য জরায়ুর মুখে সেলাই দেয়ার একটা নিয়ম আছে, বেশি বাচ্চা হওয়ায় সেটাও সম্ভব হয়নি। কারণ জরায়ুর মুখে সেলাই দিলে জরায়ু ফেটে যেতে পারে, তখন মায়ের জীবনও রিস্কে চলে যাবে। তখন থেকেই উনি আমার কাছে নিয়মিত চেকআপ করাতেন। প্রতি মাসে দুই থেকে তিনবার আসতেন। এর মধ্যে আজকে বললেন যে ওনার খারাপ লাগতেছে। তখন আমি চেক করে দেখলাম যে জরায়ুর মুখ খুলে গেছে। আর বাচ্চাদের পজিশনও ঠিক নেই… সবগুলো বাচ্চাই জীবিত জন্মগ্রহণ করেছে। তবে অপরিপক্ক হওয়ায় বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি’।

ডিসি/এসআইকে/এসইউআর