চট্টগ্রামে ১০৩০ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নে ওয়ার্ড কমিটির সভা করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ৫৩০টি স্থায়ী এবং ৫০০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিতে পারবেন ৫ লাখ ১ হাজার ১১০ জন। এছাড়া ৮ হাজার ৮৮০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত সরঞ্জামসহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, নেভি ও কোস্ট গার্ডের রেসকিউ বোট এবং মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপজেলা পর্যায়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও নগদ অর্থের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা দুর্যোগ মোকাবিলায় তাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে বলে জানান।
জানা গেছে, ফটিকছড়িতে অস্থায়ী ১১২টি, হাটহাজারীতে ১৮টি, মীরসরাইয়ে স্থায়ী ৮৫টি, রাঙ্গুনিয়ায় অস্থায়ী ২১৭টি, রাউজানে স্থায়ী ২টি, সন্দ্বীপে স্থায়ী ১১৬টি স্থায়ী, সীতাকুণ্ডে স্থায়ী ২৫টি, বাঁশখালীতে স্থায়ী ১২২টি, বোয়ালখালীতে স্থায়ী ৮টি, চন্দনাইশে স্থায়ী ৬টি, পটিয়ায় অস্থায়ী ১২৬টি, সাতকানিয়ায় স্থায়ী ৪টি, আনোয়ারায় স্থায়ী ৫৮টি, লোহাগাড়ায় অস্থায়ী ২৮টি, কর্ণফুলীতে স্থায়ী ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়া নগরীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৯৪টি স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র। ৬০৮ মেট্রিক টন চাল মজুদ করা হয়েছে। শুকনা খাবারের মধ্যে ৩.৫ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩.৪০২ মেট্রিক টন ড্রাই কেক, ৩০ হাজার প্যাকেট ওরস্যালাইন ও ৬০ হাজার প্যাকেট পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সংগ্রহ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার (১২ মে) আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও আরও ঘণীভূত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুদ্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, পৌর ও ইউনিয়ন ওয়ার্ড কমিটির সভা করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি।

ডিসি/এসআইকে/আরএসি