কক্সবাজার-টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে

কক্সবাজার প্রতিনিধি, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
‘ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ ১৫ কিলোমিটার বেড়েছে। বর্তমানে সেখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৯০ কিলোমিটার। মোখার প্রভাবে কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তবে, জলোচ্ছ্বাসের কারণে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে জলাবদ্ধতা ও ভয়াবহ পরিস্থিতি হওয়ার সুযোগ নেই।’
শনিবার (১৩ মে) বিকেলে ঘূর্ণিঝড় মোখার সবশেষ অবস্থান তুলে ধরতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন যেহেতু একটা দ্বীপ। সেখানে পানি পশ্চিম পাশ থেকে পূর্ব পাশে চলে যাবে। জলাবদ্ধতা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে সেই রকম নয়। তবে, জলোচ্ছ্বাস হলেও পানি একপাশ থেকে এসে আরেক পাশ দিয়ে নেমে যাবে।
মোখার কারণে আর কোনো সংকেত বাড়ানো হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, উপকূলে আঘাত হানার আগে আর কোনো সংকেত দেওয়া হবে না। বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা এসব জেলায় এর প্রভাব পড়বে। ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু বাতাসের গতি ১৭০ থেকে বেড়ে ১৯০ কিলোমিটার হয়েছে। এটি রবিবারের আগে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই। এ মুহূর্তে এটির শক্তি বাড়ার সম্ভাবনা দেখছি না। অতিপ্রবল অবস্থায় এটা অতিক্রম করবে। রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যা নাগাদ যেকোনো এটি উপকূল অতিক্রম করবে। কক্সবাজার ও এর উত্তরে যতই ধাবিত হবে জলোচ্ছ্বাসের গতি তত কম। তবে কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
হঠাৎ করে সংকেত বাড়ানোর কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৮, ৯ ও ১০ তিনটাই মহা বিপৎসংকেতের আওতায়। কোন অঞ্চল দিয়ে এটা অতিক্রম করবে তার ওপর নির্ভর করে ৮, ৯ ও ১০ নির্ধারণ করা হয়। যেহেতু কক্সবাজারের কাছাকাছি টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দিয়ে এটি অতিক্রম করার সম্ভাবনা আছে। সেজন্য কক্সবাজারকে মহা বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এ আবহাওয়াবিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি কেন্দ্রের পরিধি ৭৪ কিলোমিটার। এটি যদি সেন্টমার্টিনের দক্ষিণ দিক দিয়েও প্রবাহিত হয়। কেন্দ্রের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে পড়বে। উপকূলের ঘূর্ণিঝড়ে বড় অংশ আঘাত হানবে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা। সন্ধ্যা ৬টার আগে এটার আঘাত হানার সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ। ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা এর প্রভাব থাকবে। এরপর এটি দুর্বল হয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির বর্তমান গতিবেগ ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার। গতি আরও বাড়বে। উপকূলের কাছাকাছি এলে গতিবেগ বেড়ে ২০ পর্যন্ত হতে পারে। সিত্রাংয়ের সময় উপকূলে আঘাত হানার গতিবেগ ছিল ৫৬ কিলোমিটার। মোখাও উপকূলে এলে এর গতি ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসবে। ৬০০ কিলোমিটার দূরে থাকলেও আগামি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি অতিক্রম করবে।

ডিসি/এসআইকে/এফআরইউ