পানিতে চুবছে চট্টগ্রাম নগর, পাহাড় ধসের শঙ্কা

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
দ্বিতীয় দিনের মতো টানা বৃষ্টির পানিতে ভেসেছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির সঙ্গে জোয়ারের পানিতে নগরীর বেশিরভাগ নিচু এলাকা তলিয়ে যায়। নগরীর নিচু এলাকার সড়কের কোথাও হাঁটু সমান, আবার কোথাও কোমর পান জমে যায়। ব্যাহত হয় যানবাহন চলাচল। এদিকে বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়ে বাড়ি, দোকানপাট ও মসজিদেও। গতকাল শুক্রবারও একইভাবে পানিতে তলিয়ে যায় নগরী।আবহাওয়া অফিস বলছে, ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কাও রয়েছে। বৃষ্টির পানিতে চুবছে নগর- এমন অসংখ্য ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার (৫ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬২ মিলিমি টার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীতে। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আরও ২ দিন ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে আগামি ১৩ আগস্ট পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এ কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখতে বলা হয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল জানিয়েছেন, মূলত নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম ও আশেপাশের এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এটি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। যেসব এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হবে সেসব এলাকায় পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে।
জোয়ার ও বৃষ্টিতে নগরীর প্রায় সব নিচু এলাকা পানিতে ডুবে যায়। তবে চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, বহদ্দারহাট, বাস টার্মিনাল, ডিসি রোড, তিনপুলের মাথা, ষোলশহর ২ নম্বর গেট, রিয়াজ উদ্দিন বাজার এলাকায় বেশি পানি জমে যায়।
নগরীর কাপাসগোলা ও চশবাজার এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, বহদ্দারহাট-বাদুরতলা-চকবাজার সড়কের কাপাসগোলা এলাকা যেন খালে পরিণত হয়েছে। সড়কটির কোথাও কোথাও হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে যায়। এ সময় মোটরযান চলাচল ব্যাহত হয়। ইঞ্জিনে পানি ঢুকে যাওয়ায় অনেক অটোরিকশা বিকল হয়ে পড়ে। নগরীর মুরাদপুরের অবস্থা ছিল আরও ভয়াবহ। জলাবদ্ধতা এড়াতে অনেক যানবাহন বহদ্দারহাট মোড় থেকে যানবাহন ফ্লাইওভার দিয়ে লালখানবাজার পর্যন্ত চলাচল করে। এ কারণে ফ্লাইওভারেও যানজট সৃষ্টি হয়।
নগরের বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘বহদ্দারহাট থেকে চকবাজার যেতে হচ্ছে। কিন্তু পুরো রাস্তায় হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে রয়েছে’।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেম জানিয়েছেন, পানি যাতে দ্রুত নেমে যায় সেজন্য খাল ও নালাগুলোর যেসব স্থানে ময়লা-আবর্জনা জমে রয়েছে তা অপসারণ করা হচ্ছে। ফলে আগের মতো জলাবদ্ধতা বেশি সময় থাকছে না।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর