কাপ্তাইয়ে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট

মাহফুজ আলম, কাপ্তাই প্রতিনিধি >>>
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের সর্বত্রই বিশুদ্ধ খাবার পানির হাহাকার।  দূষিত পানি পান করে নানান রোগ বালাইয়ে ভুগছেন উপজেলাবাসী।  দূষিত পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না আবাল বৃদ্ধ বনিতা কেউই।  ফলে নানান অসুখ-বিসুখ নিয়েই মানবেতর জীবন যাপন করছেন এই অঞ্চলটির মানুষ।  সামান্য বিশুদ্ধ পানির জন্য মানুষকে ছুটতে হচ্ছে বিশুদ্ধ পানির উৎসের সন্ধানে।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রতি বছর পালিত হয় বিশ্ব পানি দিবস। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীতে যদি আরো একটি সম্মিলিত যুদ্ধ বাঁধে, সেটি হবে পানির জন্য।  বেশ কয়েকবছর বিশ্বব্যাপি পানি দিবস পালিত হলেও এখনো মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানি থেকে বঞ্চিত।  বর্ষা মৌসুমে এই বিশুদ্ধ পানি পাওয়া আরো দুষ্কর হয়ে যায়।  ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই যুগের পর যুগ অপরিশুদ্ধ পানি পান করে এবং ব্যবহার করে পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, টাইফয়েডসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা। পানিবাহিত রোগে প্রতিবছর প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।  তবে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।  ন্যূনতম প্রয়োজন মেটাতে দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।  কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে, পাহাড়ি চূড়া থেকে অনেক ঝক্কি-ঝামেলার সাথে কঠোর শারিরীক শ্রম দিয়ে যে পানি এনে পরিবারের চাহিদা মেটানো হচ্ছে তাও পরিশুদ্ধ নয়।
এক সময় কাপ্তাইয়ের সর্বত্রই সন্ধান মিলত সুপেও পানির।  এলাকায় এক থেকে দেড় লাখ মানুষের জীবন জীবিকা চলতো পানির উৎসগুলো থেকে।  বর্তমানে পানির উৎসস্থল পাহাড়ি ঝর্ণা, ছড়া, কুয়ার পানি শুকিয়ে যাওয়া এবং দূষিত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে বিভিন্ন রোগ বাড়তে থাকায় আজ মানুষ দিশেহারা।  এছাড়াও কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন বন উজার হওয়ার ফলে পাহাড়ি গিরি ঝর্না ও বিভিন্ন পানির উৎসগুলো নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে।  পাশাপাশি পানির স্তরও নেমে গেছে।  জীবন ধারনের জন্য একমাত্র মাত্র ভরসা টিউবওয়েল-রিংওয়েল-ডিপ টিউবওয়েল নামে মাত্র থাকলেও কলগুলো থেকে মানুষ আর পানি পাচ্ছে না।  কাপ্তাই উপজেলার প্রায় আড়াই হাজারেরও বেশি পানির কল পানির স্তর নেমে যাওয়ায় অকেজোঁ হয়ে পড়েছে।  পানির কলগুলো রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ নামে মাত্র কার্যক্রম চালালেও তেমন কোনো জোড়ালো ভূমিকা দৃশ্যমান নয়।  পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।  ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে কাপ্তাইয়ের প্রতিটি মানুষ।
এ ব্যাপারে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল (পাবলিক হেলথ) অধিদপ্তরের প্রকৌশলীর সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

ডিসি/এসআইকে/এমএ