দৈনিক চট্টগ্রাম ডেস্ক >>>
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় ৪ কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার ২৪১ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির ওপারে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। সেতুর ওপারে থাকা পাহাড়ের একপাশ কেটে এই রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, রুমা সদর ইউনিয়নের রুমা মুখ থেকে গ্যালাঙ্গিয়া ইউনিয়নে যাওয়ার জন্য নির্মিত সেতুর ওপারে বিশাল পাহাড়টির একপাশ কেটে রাস্তা করা হচ্ছে। রাস্তার কাজ বর্তমানে অনেকটাই দৃশ্যমান।
রুমার মুখ এলাকায় রাস্তা ছাড়াই সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। গত ৪ আগস্ট ‘রাস্তা ছাড়াই পাহাড়ে ৪ কোটি টাকার সেতু’ শিরোনামে রুমা সদর ইউনিয়নের রুমা মুখ থেকে গ্যালাঙ্গিয়া ইউনিয়নের ওই সেতুটি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্টরা। গত ৫ সেপ্টেম্বর সেতু পরিদর্শনে আসেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান, এলজিইডির প্রকল্প পরিচালক মো. নুরুন্নবী ও বান্দরবান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. লুৎফুর রহমান।
এ সময় মিজানুর রহমান বলেন, শিগগিরই সেতুর রাস্তার কাজ শুরু হবে। যেহেতু সেতু হয়ে গেছে, তাই পাহাড়টির কোনো ক্ষতি না করে একপাশ ঘেঁষে রাস্তা করা হবে।
স্থানীয়রা জানায়, সেতুটি নির্মাণ করার পর বলা হয়েছিল, পাহাড় কেটে মাঝখান দিয়ে রাস্তা করা হবে। এত বড় পাহাড় কেটে ফেললে অনেকের বাগানসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হবে।
স্থানীয় সাপ্রু অং মারমা জানান, বান্দরবানের যতগুলো রাস্তা হয়েছে সবগুলোই ছোট-বড় পাহাড় কেটে করা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় না কাটলে কখনোই রাস্তা করা সম্ভব না। এখন যে রাস্তাটি করা হচ্ছে সেটাও এর ব্যতিক্রম নয়।
রুমার ৩৫৩ নং কলাদিয়া মৌজার হেডম্যান সুই চিং উই মারমা বলেন, সেতুর ওপারে প্রায় তিন থেকে চার শতাধিক পরিবার রয়েছে। তারা এতদিন পাহাড়ের ভেতরের জঙ্গলের দুর্গম পথ বেয়ে হেঁটে হেঁটে রুমা সদরে আসতো। সেতুর ওপারে রাস্তার কাজ হচ্ছে। রাস্তাটির কাজ শেষ হলে এলাকার মানুষ সহজেই শহরে আসতে পারবে।
বান্দরবান এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুস শাহাদাত মো. জিললুর রহমান বলেন, রাস্তা করার উদ্দেশ্যে নিয়েই সেতুটি করা হয়েছে। অনেকের ধারণা ছিল, বিশাল পাহাড়টি আমরা কেটে ফেলবো। কিন্তু পাহাড়টির ক্ষতি না করে একপাশ দিয়ে ইউটার্ন নিয়ে রাস্তাটি করা হচ্ছে। অফিসের নিজস্ব বরাদ্দ দিয়েই আপাতত রাস্তাটি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সেতু করার আগেই আমরা ২২ কিলোমিটার রাস্তার ম্যাপ করে রেখেছিলাম। যেহেতু বড় একটি খাল রয়েছে তাই ওপারে মালামাল পাঠানোর সুবিধার্থে আগেই সেতুটি নির্মাণ করেছি। টেন্ডারের পরপরই আমরা ১২০০ মিটারের রাস্তার কাজ শুরু করেছি।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শক মো. আবদুস সালাম বলেন, পাহাড় কেটে জনসাধারণের জন্য সরকারিভাবে রাস্তা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে একপাশ কেটে ডানদিকে রাস্তা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।
ডিসি/এসআইকে/এমএসএ