অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যু, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর শোক

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক, গবেষক জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চলে গেলেন না ফেরার দেশে, যাকে ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদবিরোধী নানা আন্দোলনে সব সময় সঙ্গী হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশ। আনিসুজ্জামানের ছেলে আনন্দ জামান জানান, ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৪ মে) বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে তার বাবার মৃত্যু হয়। এদিকে রাত সাড়ে দশটার দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মৃত্যুবরণকারী ড. আনিসুজ্জামানের নমুনা পরীক্ষা করে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরম শ্রদ্ধার মানুষ ছিলেন ড. আনিসুজ্জামান।

বাহাত্তরের কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের সদস্য আনিসুজ্জামান আমৃত্যু ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও তিনি শিক্ষকতা করেছেন।  ৮৩ বছর বয়সী এই অধ্যাপক হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুসে জটিলতা, পারকিনসন্স ডিজিজ এবং প্রোস্টেটের সমস্যায় ভুগছিলেন।  শেষ দিকে তার রক্তে ইনফেকশনও দেখা দিয়েছিল।
অসুস্থতা বাড়তে থাকায় গত ২৭ এপ্রিল আনিসুজ্জামানকে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।  সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৯ মে তাকে নেওয়া হয়েছিল ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।  গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে তার মৃত্যুর খবরে নেমে আসে শোকের ছায়া।  রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অধ্যাপকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতি তার শোকবার্তায় বলেন, ‘ড. আনিসুজ্জামান ছিলেন বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।  বাংলাদেশে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে তিনি অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন।  তার মৃত্যু বাংলাদেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি’।
রাষ্ট্রের দুই সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক পাওয়া আনিসুজ্জামান ২০১৭ সালে তার আশিতম জন্মবার্ষিকীতে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, তিনি শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন।  সেক্ষেত্রে তিনি পেয়েছেন ‘প্রাপ্যের অধিক’।  তিনি সারাজীবন ছাত্র থাকতে চেয়েছিলেন। জীবনে চলার পথে অপ্রত্যাশিত আঘাত হয়ত পেয়েছেন, কিন্তু ভালোবাসা পেয়েছেন তার চেয়ে ‘অনেক বেশি’।
বাংলা একাডেমির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের দাফনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।

এদিকে তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার, সাবেক উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চসিকের প্যানেল মেয়র ও উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, দৈনিক চট্টগ্রাম ও মাসিক কাট্টলী বার্তা’র উপদেষ্টা সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমদ সাকী, সম্পাদক ও প্রকাশক সায়মা ইসলাম খান জেরিন, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগঠন ভোরের আলো’র প্রতিষ্ঠাতা মো. শফিকুল ইসলাম খান, আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান আহমদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক কাজী আলতাফ হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু সুফিয়ান, পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল আবছার মিয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আসলাম হোসেন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জুহুরুল আলম জসিম, আহ্বায়ক এসএম আলমগীর, যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার মোর্শেদ কচি ও এরশাদ মামুন, ১০ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইকবাল চৌধুরী, ওয়ার্ড আ’লীগের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন, কাউন্সিলরপ্রার্থী মনোয়ারুল আলম চৌধুরী নোবেল, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মো. ইসমাইল, সাধারণ সম্পাদক আসলাম হোসেন সওদাগর, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোরশেদ আকতার চৌধুরী, ১২ নম্বর ওয়ার্ড আ’লীগের আহ্বায়ক আলহাজ্ব মো. নুরুল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক লায়ন এম শওকত আলী, লুৎফুল হক খুশী, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছাবের আহমেদ সওদাগর, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও খুলশী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ হোসেন হিরণ, ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

ডিসি/এসআইকে/ইউএস