চট্টগ্রামে মাটির কলসির ওপর ভবন, সংরক্ষণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা এলাকায় প্রায় ২৫০ বছরেরও পুরনো একটি ভবন সংস্কারের জন্য মাটি খুঁড়তেই বেড়িয়ে আসে একের পর এক কলস।  প্রায় ২৬ শতক জায়গায় ভবনটি কলসের ওপরই দাঁড়িয়ে ছিল।  তবে কয়েকটি কলস ওপরে তুলতেই এলাকাজুড়ে গুজব রটে যায় মাটির নিচে গুপ্তধন পাওয়া গেছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলমসহ একাধিক বিশেষজ্ঞ কলসিগুলো পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে তারা জানান, এগুলো কোনো গুপ্তধন নয়।  প্রায় তিন’শ বছর আগে ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে ভবনটির নিচে এসব কলস দেয়া হয়েছে।  প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে এটিই ছিল তৎকালীন সময়ের সর্বাধুনিক পদ্ধতি।  এর পরপরই ভবনটি সংরক্ষণ করতে বিভিন্ন মহলের দাবি ওঠে।
ভবনটির বাসিন্দারা বলেন, ‘তাদের পূর্বপুরুষ ও ব্যবসায়ী, বক্সির হাটের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তুল্লাহ সওদাগর ১৭ শতাব্দীতে মিয়ানমারের রেঙ্গুন থেকে সারের জাহাজে বোঝাই করে মাটির এই কলসিগুলো আনেন।  এরপর ঘরের ভিটির তলায় স্থাপন করে ইট সুরকির সুরম্য ভবনটি নির্মাণ করেন’।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা পেয়ে শনিবার (১০ জুলাই) কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটার নজুমিয়া লেনে পুরনো ভবনটি দেখতে ছুটে যান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভবনটি সংরক্ষণ করা হবে।  ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী এটি সংরক্ষণ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন।  ভবনটির নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।  ২০১৫ সালের প্রত্ন আইনে স্থাবর সম্পত্তি ১০০ বছর ও অস্থাবর সম্পত্তি ৭৫ বছরের পুরনো হলে তা প্রত্ন সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়।  এটি প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো ভবন।  ভবনের মালিককে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে এটি অধিগ্রহণ করে সংরক্ষণ করা হবে’।

ডিসি/এসআইকে/আরএআর