এবারও হচ্ছে না জব্বারের বলীখেলা

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলা ও মেলা।  এবার বলীখেলার ১১৩তম আসর হওয়ার কথা ছিল।  তবে লালদীঘির মাঠ উন্মুক্ত না হওয়ায় এ বছরও তা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
এ সময় বলা হয়, ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে চট্টগ্রাম শহরে বলীখেলা অনুষ্ঠানের প্রচলন হয়।  ১৩১৬ বাংলার ১২ বৈশাখ, ১৯০৯ সালে প্রথম এ বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়।  ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৯০তম আসর নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়।  বলীখেলা উপলক্ষে কয়েকদিন ধরে মেলা চলে, যা প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়।  বৃটিশ শাসনের অবসানের পর রাষ্ট্রীয় এ মেলার পরিধি ও জনপ্রিয়তা ব্যাপকতা লাভ করে।  চট্টগ্রাম পৌরসভার পর সিটি কর্পোরেশন, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও গণমাধ্যমের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটি প্রতি বছর ১২ বৈশাখ এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোভিড-১৯ এর ভয়াবহতায় ২০২০ ও ২০২১ সালে বলীখেলা স্থগিত করা হয়।  মহামারি প্রতিরোধে গণটিকা প্রদানসহ বিভিন্ন কার্যকর কর্মসূচির কারণে বর্তমানে দেশ ও জাতি অনেকটা নিরাপদে।  দেশে এরই মধ্যে অনেক মেলা ও উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।  বিগত ১১০ বছর ধরে এ বলীখেলা লালদীঘির মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। ঐতিহাসিক লালদীঘির মাঠ শত বছর ধরে ঘটে যাওয়া অনেক ইতিহাসের সাক্ষী।  তার স্মৃতি ধরে রাখতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রশংসার দাবিদার।  বর্তমানে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা মাঠটি এখনো উন্মুক্ত করা হয়নি।
এ সময় বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হিসেবে পরিচিত আবদুল জব্বারের বলীখেলা ও মেলাসহ চট্টগ্রামের মানুষকে সকল ধরনের অনুষ্ঠানে পুনরায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে লালদীঘির মাঠ দ্রুত উন্মুক্ত করে দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন জানান তারা।
আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির সভাপতি চসিক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী বলেন, মাটি ও মানুষের খেলা এ জব্বারের বলীখেলা।  করোনার কারণে গত দুই বছর হয়নি। এ বছর হওয়ার কথা ছিল।  কিন্তু এ বছরও আমরা আয়োজন করতে পারছি না।  বহু ইতিহাসের সাক্ষী লালদীঘি মাঠে বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।  সেই মহান মানুষটির জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দু’বছর আগে লালদীঘি মাঠে ঐতিহাসিক ছয় দফার স্মৃতি সংরক্ষণে ‘সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন’ প্রকল্প হাতে নেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর।
তিনি বলেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন।  তাই মাঠটি উম্মুক্ত করা হয়নি।  যদি এটি আগামী বছর সবার জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা আয়োজন করবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাবেক কমিশনার এএসএম জাফর, সাধারণ সম্পাদক সওকত আনোয়ার বাদল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জামাল হোসেন প্রমুখ।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ