বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষধর ৬ সাপ চিনবেন যেভাবে

জেনে নিন ডেস্ক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
বর্ষায় সাপের উপদ্রব অনেক বেড়ে যায়। অন্য সময়ে সাপের দেখা লোকালয়ে কম হলেও বর্ষায় চারদিক পানি থাকায় সাপের দেখা মেলে বেশি। এজন্য এসময় প্রায়ই সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংবাদ শোনা যায়।
প্রতি বন্যার সময় অর্থাৎ মে, জুন এবং জুলাই-এই তিন মাস সাপের দংশন এবং তার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ে। দেশব্যাপী পরিচালিত অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি) সর্পদংশন জরিপে দেখা যায়, দেশে প্রতিবছর ৪ লাখ ৩ হাজার ৩১৭ জন মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয় এবং এতে ৭ হাজার ৫১১ জন মানুষ মারা যায়। প্রতিটি সর্পদংশনের কারণে চিকিৎসার জন্য দংশিত ব্যক্তির প্রায় ২ হাজার টাকা ব্যয় হয়।
তবে সব সাপ কিন্তু বিষধর নয়। তাই যে কোনো সাপ কামড়ালেই যে মানুষ মারা যায় তা নয়। দেশের আনাচে কানাচে ৮০ প্রজাতির সাপ ঘুরে বেড়ায়। এর মধ্যে মাত্র সাত থেকে আট প্রজাতির অত্যন্ত বিষধর সাপের কামড়ে মানুষ বেশি মারা যায়। বাকি অন্য অনেক প্রজাতির সাপ রয়েছে, যেগুলো মানুষের থেকেই বরং দূরে থাকে।
দেশের কয়েকটি বিষধর সাপ সম্পর্কে জেনে রাখুন-
চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার
চন্দ্রবোড়ার আরেক নাম উলুবোড়া। বাংলাদেশে যেসব সাপ দেখা যায়, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে বিষাক্ত। এই সাপটি প্রায় একশো বছর আগে বাংলাদেশ থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, অর্থাৎ পরপর কয়েক দশকে এর একটি সাপেরও দেখা মেলেনি। কিন্তু গত ১০/১২ বছর আগে থেকে আবার এই সাপে দংশনের প্রমাণ দেখা যায়।
কিং কোবরা বা শঙ্খচূড়
একে রাজ গোখরা এবং পদ্ম গোখরাও বলা হয়। ভয়াবহ বিষধর এই শঙ্খচূড় অন্য গোখরার তুলনায় আকৃতিতে বেশ লম্বা। এর ফণায় অন্য গোখরার মতো চশমার মতো বলয় থাকে না। শঙ্খচূড় বাংলাদেশ, ভুটান, বার্মা, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এসব দেশে বেশি দেখা যায়। এই সাপ ঘন জঙ্গল ও পাহাড়ি এলাকায় থাকতে পছন্দ করে।
ক্রেইট, কেউটে বা শঙ্খিনী
এই সাপকে শঙ্খিনী এবং শাঁকিনী সাপ নামেও ডাকা হয়। শ্রীমঙ্গলে দেখা মেলে এই সাপের। পৃথিবীতে ক্রেইট বা শঙ্খিনী জাতের সাপের মোট ৮টি প্রজাতি রয়েছে, এর মধ্যে ৫টি প্রজাতি বাংলাদেশে পাওয়া যায়। এই ক্রেইট জাতের সাপকে স্থানীয়ভাবে কেউটেও বলা হয়। এ সাপ বাড়ির আশপাশে বা লাকড়ির মধ্যে শুকনো জায়গায় থাকে।
নায়া নায়া
বৈজ্ঞানিক নাম নায়া নায়া হলেও এটি কোবরা বা গোখরা প্রজাতির সাপ। এটি স্থলভূমির সাপ, এটি ফণা তোলে এবং এর ফণায় চশমার মতো দুইটি বলয় থাকে। দেশের পশ্চিম অংশেই অর্থাৎ রাজশাহী অঞ্চলের দিকে প্রধানত এ সাপের বসবাস।
নায়া কাউচিয়া
এটিও গোখরা প্রজাতির সাপ, স্থানীয়ভাবে একে জাতি সাপ বা জাত সাপও বলে থাকে। এই সাপটিকে জউরা নামেও ডাকা হয়। এটি মূলত দেশের পূর্ব অংশ অর্থাৎ সিলেট, নোয়াখালী এলাকায় বেশি থাকে। দেশে যত সর্প দংশনের ঘটনা ঘটে, এর কামড়ে ঘটে সর্বোচ্চ। এ সাপ ফণা তোলে।
কালো নাইজার
এটিও শঙ্খিনী জাতের সাপ এবং বাংলাদেশে প্রচুর সংখ্যায় রয়েছে এই সাপ। এটি চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চল, নোয়াখালী এবং সুন্দরবন অঞ্চলে দেখা যায় বেশি।

ডিসি/এসআইকে/এমএসএ