হাটহাজারিতে ভুয়া এমবিবিএস চিকিৎসক

মো. মোতাহের উদ্দিন মাজেদ, হাটহাজারী থেকে
উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় এক ভুয়া এমবিবিএস চিকিৎসককে সনাক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে তাকে সনাক্ত করা হয়। অধ্যাপক ডা. মো. সোলায়মান (৬৫) নামের এই ব্যক্তি উপজেলার মেখল রোডের নাসরিন ভবনের নিচ তলায় চেম্বারসহ রীতিমত মিনি ক্লিনিক খুলে নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সর্বরোগের চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে সহজ সরল রোগীদের সাথে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে আসছেন। তিনি মূলত একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক বলে স্বীকার করেছেন। পরে বয়স বিবেচনা এবং করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় এবং ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

মো. সোলায়মান।

জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর পূর্বে তিনি হাটহাজারী উপজেলার ১১ মাইল নামক স্হানে প্রথম হোমিও চিকিৎসক হিসেবে চেম্বার খুলে হোমিও চিকিৎসা দেয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ‌‌ডক্টরস কেয়ার অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার নামে হাটহাজারী সদরের মেখল রোডের নাসরিন ভবনে নিজ বাসায় চেম্বার এবং ২ বেডের মিনি ক্লিনিক খুলে বসেন। নামের পেছনে এমবিসিএস (ঢাকা), এমবিবিএস (কোলকাতা), এমডি.এম ফিলসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, এমনকি চিকিৎসায় স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত বলেও সাইনবোর্ডে, ভিজিটিং কার্ড ও প্রেসক্রিপশন প্যাডে উল্লেখ করেন।

অবৈধভাবে গড়ে তোলা মিনি ক্লিনিকের শয্যায় রোগী।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে তিনি (মো. সোলায়মান) এমবিবিএস পাশের কোনো সনদ দেখাতে পারেননি। ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্হিত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম ইমতিয়াজ ধৃত অভিযুক্ত ভুয়া চিকিৎসক সোলায়মান) ঢাকার কোন মেডিকেল থেকে এমবিবিএস পাশ করেছেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি স্বীকার করেন তিনি এমবিবিএস পাশ করেননি। তাহলে লিখলেন কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভুলে লিখেছেন। বাসায় বেডসহ ক্লিনিক খুলে রোগী দেখছেন কেন? তিনি বলেন রোগীরা নিজেরাই এসেছেন। এক পর্যায়ে তিনি রাগ হয়ে বলেন, ‌‘যান এখন থেকে শুধুমাত্র হোমিওপ্যাথিক প্রাকটিস করবো’।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দানকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, মো. সোলায়মান এর বয়স বিবেচনা এবং বর্তমান করোনা পরিস্হিতির কথা বিবেচনা করে কঠোর শাস্তির পরিবর্তে মুচলেকা নিয়ে চেম্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ধরনের কাজ করবেন না বলে তিনি একটি অঙ্গীকার পত্রও দেন।

ডিসি/এসআইকে/এমএমইউএম