প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হাটহাজারীতে, বাড়ি লকডাউন

হাটহাজারী প্রতিনিধি >>>
উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় প্রথমবারের মত করোনা ভাইরাস কোভিড- ১৯ এ আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছেন।  আক্রান্ত ২৮ বছর বয়সী ওই যুবক স্থানীয় একটি কম্পিউটারের দোকানে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতেন।  বুধবার (৬ মে) বিকালে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  করোনা সনাক্ত হওয়া ওই যুবকের বাড়ি উপজেলার ২ নম্বর ধলই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে।  তিনি দীর্ঘদিন ধরে উক্ত ইউনিয়নের কাটিরহাট বাজারে একটি কম্পিউটারের দোকানে চাকুরি করছেন।  ওই যুবকের বাড়ি পুলিশ লকডাউন করেছে বলে জানান হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ আলম।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসাইন জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ সনাক্ত ওই যুবকের আগে থেকে শ্বাস কষ্টের (হাঁপানি) সমস্যা ছিল।  গত ২৯ এপ্রিল ওই যুবক আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফ্লু কর্ণারে নমুনা দিয়ে যান।  তার নমুনা চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে পাঠানো হয়।  সেখান থেকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) পরীক্ষায় বুধবার (৬ মে) ফলাফল পাওয়া যায়।  এতে ওই যুবকের শরীরে করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।  করোনা পজিটিভ আসা ওই যুবক আপাতত সুস্থ আছেন।  তার চিকিৎসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আক্রান্ত যুবক জানান, তিনি গত এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে বাড়ির বাইরে অন্য কোথাও যাননি।  তাছাড়া যে দোকানে চাকুরি করতেন সেখানে ২৬ মার্চ এর পর আর যাননি।  পূর্বে থেকে তার শ্বাসকষ্টও ছিল।  তারমধ্যে কিছুদিন আগে জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হন।  এজন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে করোনা টেস্ট করান।  তিনি জানান, ‘তবে আমি আমার পজিটিভ রিপোর্ট সনাক্ত হওয়া নিয়ে সন্দিহান।  কারণ জ্বর-সর্দি আক্রান্ত হওয়ার দুইদিন পর ঔষুধ খেয়ে আমি সুস্থ হয়ে গেছি।  বর্তমানে আমি পুরোপুরি সুস্থ’।
এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে চাউল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, ছোলা, সেমাই ও সবজিসহ ৭ দিনের খাবার নিয়ে ‘ভালোবাসার উপহার’ পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন। তিনি জানান, ওই ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাস সনাক্তের পর তার বাড়ি নিয়ম অনুযায়ী লকডাউন করে দিয়েছি আমরা।  লকডাউন করে দেওয়ায় বাড়ির কেউ আর বের হতে পারবেন না।  তবে তার বাড়িতে থাকা ওই ব্যক্তির বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা যাতে খাদ্য সংকটে না পড়েন সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাউল, ডাল, তেলসহ নানা পদের সবজি পাঠানো হয়েছে।  তিনি আরও জানান, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে তার পরিবারের জন্য আগামি দুই সপ্তাহ খাবার সরবরাহ করবে উপজেলা প্রশাসন।  এছাড়া তাদের যে কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবো আমরা।

ডিসি/এসআইকে/এমএমইউএম