কাপ্তাইয়ে খেয়াঘাট মাঝিদের দুর্দিন, ইজারাদারের মাথায় হাত

মাহফুজ আলম, কাপ্তাই প্রতিনিধি >>>
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেশব্যাপি প্রকট আকার ধারণ করেছে।  চলছে অঘোষিত লকডাউন।  সরকারের পক্ষ থেকে বেশকিছু বিধি-নিষেধ এবং সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় থমকে আছে দেশজ অর্থনীতি।  আর এই থমকে থাকার প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগী হচ্ছেন পার্বত্য রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী খেয়াঘাটের মাঝি ও ইজাদারও।  বিধি-নিষেধ আর লকডাউনে নদী পথে নৌকা-সাম্পানযোগে চলাচলে স্থবিরতা নেমে আসায় দুর্দিন ভর করেছে এখানকার নৌকা-সাম্পানের মাঝিদের জীবনে।  ভালো নেই মোটাঙ্কের টাকা দিয়ে ঘাট ইজারা নেয়া ব্যক্তিরাও।  তাদের প্রতিদিনই হজম করতে হচ্ছে আর্থিক ক্ষতি।
দেশের সাধারণ মানুষ সরকারি নির্দেশে মেনে চলায় এবং সবকিছু বন্ধ থাকায় যান ও মানব চলাচল সীমিত হয়ে যায়।  এতে করে রাইখালী খেয়াঘাটের নিয়ন্ত্রণাধীন ফেরিঘাট, থানা ঘাট, নারানগিরি ঘাটসহ বিভিন্ন খেয়াঘাট দিয়ে নদী পারাপারে নৌকা-সাম্পানে করে যাত্রী চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।  আর এতে ক্ষতির মুখে পড়েন এখানকার ইজারাদার ও প্রায় শ-খানেক মাঝি।  বিশেষত নৌকা ও সাম্পান মাঝিরা নদীতে মানুষদের পারাপার করে যে আয় করতেন তা দিয়েই তাদের সংসার চলতো।  এসব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন হতাশায় ভুগছেন এখানকার ‍মাঝিরা, দুশ্চিন্তা ভর করেছে পরিবারগুলোতে।  এই পরিস্থিতি থেকে উঠে আসতে করোনা পরিস্থিতির পর অন্তত বছরখানেক সময় লাগবে বলে তারা জানান।  অনেক মাঝি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা বানিয়েছেন/কিনেছেন, অনেকে করেছেন ধার-কর্জ।  এই দায়-দেনা চুকাতেও তাদের তাদের দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন।
কাপ্তাই খেয়াঘাট মাঝি সমিতির সভাপতি সালাম, সাধারণ সম্পাদক এম ইউসুফ দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে আমাদের মাঝিরা খুবই অভাব-অনটনে আছেন।  এখনো পর্যন্ত মাঝিরা সরকারি কোনো খাদ্য সামগ্রী বা কোনো সাহায্য পায়নি।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে খেয়াঘাট ইজারাদার উছিংথোয়াই চৌধুরী বাবলু ও মো. সেলিম দৈনিক চট্টগ্রামের এ প্রতিনিধিকে বলেন, এবার রাইখালী খেয়াঘাট ইজারা নিয়েছি আয়কর ভ্যাটসহ ২৩ লাখ টাকারও বেশি দর দিয়ে।  এরমধ্যেই লকডাউন।  গেল ১৪ এপ্রিল দেশে লকডাউন চলাকালীন ইজারা কার্যাদেশ অনুযায়ী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি নানাবিধ সমস্যার মধ্যদিয়ে।  তারা আরো বলেন, এভাবে চলতে থাকলে খেয়াঘাট ইজারা খাতে আমাদের আমাদের বড় ধরণের লোকসান দিতে হবে।  ইতোমধ্যে প্রায় আড়াইমাস ব্যবসা বন্ধ।  জানি না এই টাকার ঘাটতি কিভাবে পূরণ করবো।

এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে একাধিকবার ফোন করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি। 

ডিসি/এসআইকে/এমএ