বাড়ছে রোগী, মানছে না লকডাউন, উদ্বিগ্ন সবাই

মো. মোতাহের উদ্দিন মাজেদ, হাটহাজারী থেকে >>>
হাটহাজারী উপজেলা গত ২০ এপ্রিল থেকে লকডাউন।  প্রথম কয়েকদিন লকডাউনে বেশ কড়াকড়ি থাকলেও সেই কড়াকড়ি অবস্থা এখন আর নেই।  সরেজমিনে দেখা যায়, হাটহাজারী বাজার, বাসস্ট্যান্ড, মীরেরহাট, সরকারহাটসহ উপজেলার বিভিন্ন স্হানে লোকজন অনায়াসে ঘুরাঘুরি করছে, মানছে না সামাজিক দূরত্ব।  কোনো কোনো জায়গায় একাধিক ব্যক্তি একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। আবার উল্লেখিত এলাকায় দেখা যায় দোকানপাট খোলা, আর সেসব দোকানের সামনে একে অপরের সাথে ঘেঁষাঘেঁষি করেই জটলা পাকিয়েছেন। দোকানের সামনে মানুষের এমন জটলায় মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা।
অন্যদিকে, রাস্তায় একমাত্র দূরপাল্লার পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া গণপরিবহন চলাচল বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও দেখা যায় এর সম্পূর্ণ বিপরীত দৃশ্য।  সারি সারি যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকসা, টেম্পু, প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য যানবাহন অন্যান্য স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলাচল করছে।  হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মহামারি করোনা থেকে জনসাধারণ মানুষকে মুক্ত রাখতে।  কিন্তু জনসাধারণ এর যেনো তোয়াক্কাই করছে না।
এ প্রসংগে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রুহুল আমিন দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, ‘আজ প্রায় দেড় মাস হাটহাজারী উপজেলা  প্রশাসন রাত-দিন নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।  তারপরেও হাটহাজারীর মানুষের আচরণের পরিবর্তন হয়নি।  হাটহাজারীর লোকজন লকডাউন মানে না, আইন অমান্য করে দোকানপাট খোলা রাখছে।  আমরা যখন যাই দোকান বন্ধ করে সঁটকে পড়ে।  আমরা চলে গেলে আবার তারা দোকান খুলে বসে।  হাটহাজারীতে লাখ লাখ পুলিশ নাই যে এতোগুলো মানুষকে পাহাড়া দিবে’।
এদিকে, শুক্হারবার (৮ মে) হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নে মুনিয়া পুকুর এলাকায় নতুন আরেকজন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছেন। এনিয়ে হাটহাজারীতে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৩ জনে। একদিকে মানুষের অসচেতনতা, অন্যদিকে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি- এনিয়ে সচেতন মহল রীতিমত উদ্বিগ্ন।
আলীপুর রহমানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাহনাজ আক্তার দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, সত্যি আমরা উদ্বিগ্ন যে, মানুষের মাঝে সচেতনতার বড়ই অভাব।  আমরা নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সকলকে অবহিত করলেও মানুষের মাঝে তা মেনে চলার মনোভাব খুবই কম।  এতে আমরা কোনো ভয়ঙ্কর পরিস্হিতির দিকে যাচ্ছি কিনা তা ভেবে দেখা দরকার।
এদিকে আগামি ১০ মে থেকে হাটহাজারীতে শপিং মল খোলার কথা রয়েছে।  সচেতন মহলের অনেকে এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। উপজেলার সমাজকর্মী ও সংগঠক ইউনুছ খন্দকার দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, ‘এমনিতেই হাটহাজারীতে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা কম। কেউ লকডাউন মানছে না।  তার উপর মার্কেট খোলা হলে সেখানে গণজমায়েত বাড়বে এবং একটি ভয়ানক পরিস্হিতির মধ্যে হয়তো হাটহাজারীবাসীকে পড়তে হবে’।
হাটহাজারী উপজেলার লকডাউন বিষয়ে কেউ কেউ মনে করছেন প্রশাসন লকডাউন এর পর কয়েকদিন কঠোর থাকলেও পরবর্তিতে অনেকটা
শিথিল হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের মতে, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশবাহিনী, সেনাবাহিনী, স্বাস্থ্য বিভাগ দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। ৯ মে থেকে প্রশাসন আরো কঠোর অব্স্হানে যাবে।

ডিসি/এসআইকে/ এমএমইউএম