অলংকার মোড়ে ময়লার স্তুপ ২০ দিন ধরে, পুরো এলাকা দুর্গন্ধময়

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
চট্টগ্রাম মহানগরের অলংকার মোড়, ব্যস্ততম এই মোড়েই দীর্ঘ ২০ দিন ধরে জমে আছে ময়লার স্তুপ।  স্থানীয় ব্যবসায়ী, পথচারী, যাত্রীসহ সাধারণ মানুষের জন্য দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে এই স্তুপ।  পুরো এলাকাটিকে দুর্গন্ধময় করে তুলেছে খালসম নালা থেকে তুলে ফেলে রাখা এসব ময়লা-আবর্জনা।  ফেলে রাখা এই ময়লার স্তুপ ধীরে ধীরে উঠে পড়ছে প্রধান সড়কটিতে।  স্তুপের চারপাশে বৃষ্টির পানি, ময়লা-কাঁদায় একাকার হয়ে গেছে।  ফলে হাঁটাচলাও দায় হয়ে গেছে।  দুর্গন্ধে মানুষ অতিষ্ট, অতীষ্ট স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও।
সরেজমিনে পরিদর্শন এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি জুন মাসের একেবারে শুরুর দিকে অলংকার মোড়ের সাইমন হোটেন, নুরজাহান টাওয়ার সংলগ্ন খালসম নালা থেকে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য তোলা হয়।  এসব বর্জ্য নুর হাজার টাওয়ারের সামনে ফেলা হয়।  এতে করে ঢাকা পড়ে যায় টাওয়ারের প্রথম তলা।  দীর্ঘ প্রায় ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও এসব আবর্জনা সরিয়ে নেয়নি সংশ্লিষ্টরা।  এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের জানালেও কোনো কাজ হয়নি।  এসব ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে এলাকার ব্যবসায়ী, বাসিন্দারা অতীষ্ট।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক ‘মেগা প্রকল্প’ বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন বিভাগ এসব আবর্জনা তুলে এখানে রেখেছে।  কি কারণে এসব ময়লা এখান থেকে সরানো হচ্ছে না তা জানতে চাইলেও সংশ্লিষ্ট কেউ কোনো কথা বলতে চাননি।  এসব বর্জ্য বৃষ্টিতে আবারো যেমন নালায় গিয়ে পড়ছে, তেমনি পুরো এলাকার পরিবেশ দুর্গন্ধময় করেছে।  এসব আবর্জনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেছে পুরো চত্তরে।
অলংকার মোড়ের ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করা এক কনস্টেবল দৈনিক চট্টগ্রামকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে এসব ময়লা জমে পুরো এলাকার পরিবেশ ভারি করে তুলেছে।  আমরা এমনিতেই সারাদিন ধুলোবালিতে কাজ করি।  তারমধ্যে এই ময়লার স্তুপের গন্ধে টিকে থাকা দায় হয়ে গেছে।
পথচারী কলেজ শিক্ষার্থী আফরিন নাজমীনা হক দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, খুব বাজে অবস্থা।  একটা গুরুত্বপূর্ণ মোড়, ব্যস্ততম এলাকায় এমন ময়লার স্তুপ অসহ্য।  আমি ব্যাংকে এসেছিলাম।  আমি খুবই অস্বস্থিবোধ করছি।
নুরজাহান টাওয়ারে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করা এলজি বাটারফ্লাই শো-রুমের ব্যবস্থাপক মো. মামুন দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, জুন মাসের ১/২ তারিখে এসব আবর্জনা নালা থেকে তোলা হয়।  এরপর এগুলো আমাদের ভবনের সামনেই ফুটপাতজুড়ে স্তুপ করে ফেলে রাখা হয়েছে।  আমাদের শো-রুমে কাস্টমার আসছেন না, এটার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এর দুর্গন্ধে এখানে টিকে থাকা কষ্টকর।  এসব আবর্জনা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।  বৃষ্টির পানি, কাঁদার সাথে যুক্ত হয়ে অস্বস্থিকর পরিবেশে পরিণত হয়েছে।  অনেকবার বলেও কিছু হয়নি।
এই বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দীকিকে ফোন করা হলে তিনি দৈনিক চট্টগ্রামকে বলেন, এগুলো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে নেই। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিভাগ করছে।  এসব ময়লা কেন সরানো হচ্ছে না সেটা আমার জানা নেই।  আমাদের এখানে কিছুই করার নেই।

ডিসি/এসআইকে/আইএস