উত্তর কাট্টলীতে লকডাউনে থাকা বাসিন্দাদের জন্য বিনামূল্যে মাছ

নগর প্রতিবেদক, দৈনিক চট্টগ্রাম >>>
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনে থাকা নগরের উত্তর কাট্টলীর অধিবাসীদের জন্য বিনামূল্যে মাছ বিতরণ করেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু।  লকডাউনের ১২তম দিন আজ রবিবার (২৮ জুন) তিনি এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেন।  জানা গেছে, ওয়ার্ডের কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষদের ঘরে রাখতে প্রতিদিন ১৮০ কেজি মাছ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও চসিকের প্যানেল মেয়র ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু জানান, মরণঘাতী ভাইরাস থেকে মানুষকে বাঁচাতে উত্তর কাট্টলীতে লকডাউন চলছে।  এতে করে আমার ওয়ার্ডের সাধারণ দিনমজুর-শ্রমজীবী মানুষ এবং নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো অসহনীয় কষ্টে আছেন।  এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেই কষ্ট লাঘবে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিদিন ১৮০ কেজি মাছ বিনামূল্যে বিতরণ করছি।  এটি আজ লকডাউনের ১২তম দিন থেকে শুরু করলাম।  তিনি বলেন, দীর্ঘ ১২ দিন ধরে ওয়ার্ডবাসী ঘরবন্দী।  দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষদের মাঝে সরকার কর্তৃক সরবরাহকৃত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ করা হচ্ছে।  এছাড়াও আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে, মোস্তফা-হাকিম গ্রুপ, সিম সিম গ্রুপসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় ত্রাণ বিতরণসহ রান্না করা খাবার বিতরণ করছি।  এসবই লকডাউন চলাকালে মানুষ যাতে ঘরে থাকেন সে জন্য করা হচ্ছে।  গত ১২ দিন ধরে মানুষ গৃহবন্দি হয়ে আছে।  থাকতে হবে আরও ১০ দিন।  নিজেকে, সমাজকে ও দেশকে বাঁচাতে ঘরে থাকার কোনো বিকল্প নেই।  কিন্তু অনেকের জমানো খাবার নেই বা কন্ট্রোল রুমের সেবা নিয়ে কিনে খাওয়ার সামর্থ নেই।  এমন ২ হাজার মানুষের জন্য রান্না করা খাবার সরবরাহ করছি।  আবার অনেকে মুরগি আর আলু খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে উঠেছেন।  বাজার বসে না।  চাইলেও মাছ কিনে খাওয়ার সুযোগ নেই।  তাই আমি সরাসরি মাছ সংগ্রহ করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছি।  একেক দিন একেক এলাকায় এসব মাছ বিতরণ করা হবে।  তবে সবাইকে বাড়িতেই থাকবে হবে।  বাড়িতেই পৌঁছে যাবে আমাদের মৎস্য সেবা।
এই ওয়ার্ডে হাজারও শ্রমজীবী ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের বসবাস।  লকডাউনের শুরু থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৫ কেজি চাউলের প্যাকেট ৫ হাজার পরিবারে বিতরণ করা হয়েছে।  এছাড়াও কোনোভাবেই যেন অসুস্থ রোগীকে নিয়ে বিপাকে পরতে না হয় সে জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উদ্যোগে দুইটি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটিসহ মোট তিনটি অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক রাখা হয়েছে।  এছাড়াও তিনটি মেডিকেল টিম অক্সিজেন সাপোর্টসহ চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে।  এ পর্যন্ত ১৬ হাজার মানুষকে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন (মঙ্গলবার) মধ্যরাত থেকে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের লকডাউন বাস্তবায়ন শুরু হয়।  লকডাউনের শুরু থেকে ওয়ার্ডের ২০টি প্রবেশপথের মধ্যে ১৪টি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়।  বাকি ছয়টি জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য আংশিক খোলা রাখা হয়।  তবে লকডাউনের মধ্যেও অন্যান্য সময়ের মতো ওয়ার্ডের সর্বোত্র মানুষজনের চলাচল, লকডাউন এলাকা থেকে বাহির ও প্রবেশ লক্ষ্য করা গেছে।  জানা গেছে, লকডাউনের প্রস্তুতি ও নির্দেশনা এবং সিদ্ধান্ত অনুসারে যে পরিমাণ বরাদ্দ, বাজেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের কথা ছিল তা করা হয়নি।  এতে করে জনচলাচল, অলিতে-গলিতে আড্ডা এবং প্রবেশ-বাহির নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

ডিসি/এসআইকে/আইএস